রানিগঞ্জ: সঙ্গী প্রার্থী স্ত্রী। ভোটার না হয়েও, রানিগঞ্জের ভোটকেন্দ্রে দাপিয়ে বেড়ালেন লোহাচুরিতে দোষী সাব্যস্ত তৃণমূল নেতা সোহরাব আলি। মোবাইল ফোনে কথা বলায় বাধা কেন্দ্রীয় বাহিনীর। বিধায়ক হিসেবে করতেই পারি, সাফাই সোহরাবের। ঘটনার জেরে অপসারিত প্রিসাইডিং অফিসার।

 

ভোটের আগে ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে।

আর ভোটের দিন বহিরাগত হয়েও ভোটকেন্দ্রে দাপিয়ে বেড়ালেন তিনি!

প্রার্থী হতে না পারলেও, তিনি যে রানিগঞ্জের বেতাজ-বাদশা, তা ফের বুঝিয়ে দিলেন রেলের লোহাচুরিতে সাজাপ্রাপ্ত বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক সোহরাব আলি!

 

ভোট শুরু হতেই বিরোধীরা অভিযোগ তোলে, রানিগঞ্জের বিভিন্ন বুথে ঢুকে ভোট তদারকি করছেন সোহরাব। খবর পেয়ে এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি রানিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫৯ নম্বর বুথে যান। দেখা মেলে সোহরাবের। সঙ্গে স্ত্রী, তৃণমূল প্রার্থী নার্গিস বানো। বুথের মধ্যেই ঢুকতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু ক্যামেরা দেখামাত্রই থমকান সোহরাব। একপ্রকার বাধ্য হয়ে বুথের দরজার সামনে থেকেই ভিতরে থাকা দলীয় এজেন্টের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

এরপর মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেখা যায়, তৃণমূলের বিদায়ী বিধায়ক সোহরাবকে। আপত্তি জানান কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ান। কিন্তু তাতে থোড়াই কেয়ার!

 

 

কিন্তু তা সত্ত্বেও ভোটকেন্দ্র ছাড়েননি সোহরাব। মোবাইল কানে ঠায় ৫ মিনিট ভোটকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।

 

বিরোধীদের দাবি, সোহরাব আলি তো আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রের ভোটার! তাহলে রানিগঞ্জের এই ভোটকেন্দ্রে তিনি কী করছেন? প্রার্থী হিসেব নার্গিস যেতেই পারেন, কিন্তু তাঁর স্বামী সোহরাব কেন?

 

 

সংবাদমাধ্যমে ছবি সম্প্রচার হতেই তৎপর হয় নির্বাচন কমিশন। সরিয়ে দেওয়া হয় রানিগঞ্জের ৫৯ নম্বর বুথের প্রিসাইডিং অফিসারকে।

 

ক’দিন আগে লোহাচুরিতে সাজাপ্রাপ্ত এই নেতার পাশে দাঁড়িয়ে, প্রকাশ্য সভা থেকে তাঁকে বেচারা বলে সম্বোধন করেছিলেন তৃণমূলনেত্রী!

 

 

স্ত্রী প্রার্থী হলেও, তাঁর প্রচারে আসনে ছিলেন সেই সোহরাবই।

আর ভোটের দিনও সেই তিনিই দাপট দেখালেন। লোহা চুরিতে দোষী সাব্যস্ত তৃণমূল নেতা সোহরাব।

 

আর শুধু দোষী সাব্যস্ত সোহরাবই নন, সোমবার তৃণমূলের হয়ে ভোটের ময়দানে নামেন দলের আরেক অভিযুক্ত নেতা নরেন চক্রবর্তীও। মাস দুয়েক আগে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার হন বর্ধমান জেলা পরিষদের এই কৃষি কর্মাধ্যক্ষ। সোমবার সেই তিনিই পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল প্রার্থী জিতেন্দ্র তিওয়ারির নির্বাচনী এজেন্ট। সকাল থেকে বুথে বুথে নরেন। বিরোধীদের আশঙ্কা, ভোটারদের প্রভাবিত করছেন এই তৃণমূল নেতা।

 

বিরোধীদের অভিযোগ সম্পর্কে দার্শনিকের সুর নরেন চক্রবর্তীর গলায়। তিনি বলেন, এরকম তো কোনও আইন নেই যে, দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত এজেন্ট হতে পারবেন না।

 

বিরোধীদের কটাক্ষ, আইন নাই থাকতে পারে। কিন্তু, নৈতিকতা বলেও কি কিছু নেই?