কলকাতা: রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাত নতুন মাত্রা স্পর্শ করল বুধবার। এতদিন শুধু অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের পালা চলছিল। এবার সরাসরি রাজ্যপালকে সরানোর দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে স্মারকলিপি জমা দিল তৃণমূল সরকার।


বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, রাজ্যের রাজনৈতিক পারদ তত ঊর্ধ্বমুখী। একদিকে যেমন বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করেন রাজ্যপাল, সেরকম সরকারের তরফেও বারবার কাঠগড়ায় তোলা হয় রাজ্যপালকে। বুধবার তৃণমূল ভবনে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। সেখানে তিনি অভিযোগের সুরে জানান, সংবিধান মানছেন না রাজ্যপাল। প্রশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। পুলিশকে ভয় দেখাচ্ছেন। রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে রাজ্যপালকে সরানোর দাবি তুলেছে তৃণমূল। দাবি করেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়।

সুখেন্দুশেখর বলেছেন, ‘সংবিধান মানছেন না রাজ্যপাল। পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। সাংবিধানিক লক্ষ্মণরেখা ডিঙোচ্ছেন। মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে কথা বলছেন। দিল্লির শাহেনশাহদের এজেন্ডা পূরণ করছেন।’ তিনি যোগ করেন, ‘রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। স্পিকারের আচরণে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। এটা বিধানসভার সার্বভৌমত্বর উপর আঘাত। পুলিশদের উনি ভয় দেখাচ্ছেন। বলছেন নির্বাচন সুষ্ঠু যাতে হয় দেখব, উনি কে? এজন্য তো নির্বাচন কমিশন আছে।’

তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদের অভিযোগ, সংবিধান ও সুপ্রিম কোর্টকে অমান্য করছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বলছেন, ‘মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কথা বললে, তা সংবিধানের পরিপন্থী। পুরনো মামলাতে আগেই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। উনি রাজ্যপাল পদযোগ্য নন। সংবিধান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ উনি জ্ঞানত জলাঞ্জলি দিচ্ছেন।’

রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল। সুখেন্দুশেখর বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতির কাছে রাজ্যপালকে সরানোর দাবি জানিয়েছি। সংবিধানের ১৫৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী আমাদের এই দাবি।’ রাজনৈতিক মহলের সঙ্গে পরিচিতরা বলছেন, রাষ্ট্রপতির কাছে রাজ্যপালকে সরানোর দাবি বেশ বিরল।

অবশ্য বাকযুদ্ধ থামার কোনও লক্ষ্মণ নেই। কারণ, পাল্টা মুখ খুলেছেন রাজ্যপালও। বুধবার ফের রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন ধনকড়। বলেছেন, ‘রাজ্যে শিক্ষার রাজনীতিকরণ চলছে।’