শালবনি: শালবনিতে বুথ দখলের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত এবিপি আনন্দ। কুড়ি হাত দূরে দাঁড়িয়ে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনী নীরব দর্শক। এত আগে বাহিনী পাঠিয়ে, রুট মার্চ করিয়ে তাহলে কী লাভ হল? সবটাই কি লোক দেখানো? সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনা দেখে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।


সোমবার সকালে শালবনির আঁধারনয়ন এলাকায় বুথজ্যামের অভিযোগ পেয়ে সেখানে যান এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি সোমনাথ দাস। বুথের বাইরে সিপিএম প্রার্থী শ্যামসুন্দর পাণ্ডের বাইট নেওয়ার সময়ই তাঁকে ঘিরে ধরে গালিগালাজ শুরু করে ৫০-৬০ জন তৃণমূলকর্মী।

সিপিএম প্রার্থী সেখান থেকে চলে যেতেই তৃণমূলকর্মীরা সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়। এবিপি আনন্দর সাংবাদিক সোমনাথ দাস, আনন্দবাজার পত্রিকার সাংবাদিক অভিজিৎ চক্রবর্তী সহ আরও কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিকে মারধর করা হয়। কেড়ে নেওয়া হয় ক্যামেরা। গোটা ঘটনার সময় মাত্র কুড়ি হাত দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। বারবার সাহায্য চাওয়া সত্ত্বেও, এগিয়ে আসা তো দূরের কথা, উল্টে হাতের ইশারায় জায়গা ফাঁকা করে দিতে বলেন তাঁরা। তৃণমূলকর্মীরা এক সাংবাদিককে দীর্ঘক্ষণ আটকেও রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।

আর এই ছবিই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকাকে। অনেকে বলছেন, চোখের সামনে তৃণমূলের হাতে সাংবাদিকদের মার খেতে দেখেও যারা নীরব দর্শক হয়ে থাকে, তাদের ভরসায় ভোটাররা কী করে বাড়ি থেকে বুথ পর্যন্ত যাবেন?

এই ঘটনা দেখে অনেকের মনে পড়ে যাচ্ছে গত বছর অক্টোবরে বিধাননগর পুরভোটের কথা। যেখানে রাজ্যের পুলিশের সামনেই রক্তাক্ত হয়েছিলেন এবিপি আনন্দ সহ একাধিক সংবাদমাধ্যমের একের পর এক সাংবাদিক।

আর এবার বিধানসভা ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনে আক্রান্ত সংবাদমাধ্যম।

এখানেই বিরোধীদের প্রশ্ন, রাজ্য পুলিশ আর কেন্দ্রীয় বাহিনীর মধ্যে তা হলে আর তফাত কী থাকল! সিপিএম-কংগ্রেস এর পিছনে মোদী-মমতার আতাঁতের গন্ধ পাচ্ছে। কটাক্ষের সুরে তারা বলছে, রাজ্যের পুলিশ যেমন মমতার সরকারের, তেমনই কেন্দ্রীয় বাহিনী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে। অর্থাৎ‍ মোদী সরকারের বাহিনী। মোদী-মমতা হাত মেলালে তাদের পুলিশ ও বাহিনী যে একসঙ্গে গাছের তলায় বিশ্রাম নেবে, এতে আর অবাক হওয়ার কী আছে!

এরইসঙ্গে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাতেও ক্ষুব্ধ বিরোধীরা। তাদের প্রশ্ন, পুরভোটের তত্বাবধানকারী রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নয় হাত-পা বাধা থাকে, কিন্তু জাতীয় নির্বাচন কমিশন তো প্রবল ক্ষমতাশালী। তাহলে তারাও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারছে না কেন?