পশ্চিম বর্ধমান: গোষ্ঠীসংঘর্ষের পর এখনও থমথমে রানিগঞ্জ। গোষ্ঠীসংঘর্ষে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেই সাধারণ মানুষ। দোকানপাট, যানবাহন তো বন্ধই, এমনকী বিপন্ন হাসপাতালের মতো জরুরি পরিষেবাও।
গোষ্ঠী সংঘর্ষের আঁচ জরুরি পরিষেবায় রানিগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রে এই হাসপাতালে কোনও পুলিশি নিরাপত্তা মেলেনি। তাই তাঁরা নিজেরাই বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করে, ভিতর থেকে তালা এঁটেছেন।
চিকিৎসক থেকে কর্মী, রোগী থেকে তাঁদের আত্মীয়, সকলেই ভিতরে কার্যত বন্দি। রোগী নিয়ে যাওয়ার উপায় নেই, এদিকে খাবারের ভাঁড়ার ফুরিয়ে আসছে। দোকানপাট বন্ধ থাকায় এরপর কী হবে, জানেন না কেউ।
রানিগঞ্জজুড়ে মঙ্গলবারও অঘোষিত বনধের চেহারা। দেখে কে বলবে, এটা কাজের দিনের ছবি। রাস্তাঘাট শুনশান। দোকানপাট বন্ধ। যানবাহন প্রায় নেই বললেই চলে। কোথাও যেতে হলে ভরসা শুধু টোটো। প্রয়োজন না পড়লে কেউ বাড়ির বাইরে পা রাখতেই সাহস পাচ্ছেন না। এখানে ওখানে দু-একটা জটলা রয়েছে। তবে চোখেমুখে আতঙ্ক নিয়ে সর্বত্র আলোচনার বিষয়বস্তু একই।
তারই মাঝে চলছে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ। ধ্বংসস্তূপ সরলেও আতঙ্ক তো মাথা থেকে সরছে না। বিশেষ করে সেই মানুষগুলির, যাঁরা গোষ্ঠীসংঘর্ষের শিকার। মঙ্গলবার সকাল থেকে পুলিশ রানিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় রুটমার্চ করে পুলিশ ও র‍্যাফ। নেতৃত্বে ছিলেন আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনাও। এদিনও রানিগঞ্জের কলেজপাড়া সহ কয়েকটি জায়গা থেকে অশান্তির খবর আসে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্তি থামাতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। ইটের আঘাতে জখম হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। বোমার আঘাতে ডান হাতে গুরুতর চোট লাগে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি হেডকোয়ার্টার অরিন্দম দত্ত চৌধুরীর। তিনি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। আহত হন এসিপি অজয় চক্রবর্তীও। গতকালের সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।