নয়াদিল্লি: নারদকাণ্ডে সিবিআই তদন্তই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার ও তৃণমূল আলাদা আলাদাভাবে যে আবেদন করেছিল, মঙ্গলবার তা খারিজ করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।


শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট নারদকাণ্ডের প্রাথমিক তদন্তভার তুলে দেয় সিবিআইয়ের হাতে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সোমবারই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে রাজ্য সরকার এবং তৃণমূল। কিন্তু, মঙ্গলবার প্রায় দু’ঘণ্টার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে সাফ জানিয়ে দেয়, নারদকাণ্ডের প্রাথমিক তদন্ত চালাবে সিবিআই-ই।

অভিযুক্তদের আইনজীবীরা অবশ্য সিবিআই তদন্ত আটকাতে মরিয়া চেষ্টা করেন।

তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙভি সর্বোচ্চ আদালতে সওয়াল করেন।

দাবি করেন, সিবিআইয়ের ওপর অনেক সময় রাজনৈতিকভাবে চাপ থাকে। সিবিআইকে তদন্তভার না দিয়ে এই মামলার জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল তৈরি করা হোক। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ বা অন্য রাজ্যের পুলিশকে দিয়ে তদন্ত করানো হোক। প্রয়োজনে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্ট সেই তদন্তে নজরদারি করুক।

বিবাদী পক্ষের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য তখন উঠে দাঁড়িয়ে পাল্টা সওয়াল করেন।

কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলাকালীন অ্যাডভোকেট জেনারেল নারদের ফুটেজ নিয়েই তো প্রশ্ন তুলেছিলেন। সেই রাজ্যের পুলিশ তদন্ত করবে কীকরে?

এরপরই সুপ্রিম কোর্ট তৃণমূলের আবেদন কার্যত পত্রপাঠ খারিজ করে দেয়। তৃণমূলের আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বলে, এটা প্রাথমিক তদন্ত। আপনারা এখনই সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাচ্ছেন কেন? সিবিআই দেশের প্রথম সারির তদন্ত সংস্থা। তারাই তদন্ত করুক।

স্টিং অপারেশন করার দু’বছর পর কেন সেই ফুটেজ সর্বসমক্ষে আনা হয়েছে, আদালতে সেই প্রশ্নও তোলেন তৃণমূল নেতাদের আইনজীবীরা। কিন্তু, বিচারপতিরা তখন হাইকোর্টে দেওয়া ম্যাথ্যু স্যামুয়েলের হলফনামা উল্লেখ করে বলেন, যিনি স্টিং অপারেশেন করেছেন, তিনি এক সাংসদের সংস্থায় কাজ করতেন। ফুটেজ দেরিতে সামনে আসার নেপথ্যে সেটা একটা কারণ হতেই পারে।

প্রাথমিক তদন্ত শেষ করার জন্য সিবিআইকে এক মাস সময় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই তদন্তে কী উঠে আসে, সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।