খড়গপুর: বুধবার খড়গপুরের নিস্তব্ধ দুপুর কেঁপে উঠে ওঠে গুলি-বোমার শব্দে। তৃণমূলের পার্টি অফিসের আশপাশ ঢেকে যায় ধোঁয়ায়। কেউ কিছু বোঝার আগেই ঝড়ের বেগে সেখান থেকে বেরিয়ে যায় একটি গাড়ি ও একটি বাইক।


শ্যুটআউট করে শ্রীনু নায়ডুর হত্যার তিনদিনের মধ্যে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করল কীভাবে? পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে উঠে আসা ছোট ছোট তথ্য জুড়েই এগিয়েছে তারা। প্রথমেই স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মেলে গাড়ির নম্বর, যাতে চড়ে দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। সেই নম্বর নিয়ে পুলিশ যায় বিভিন্ন টোল প্লাজায়। কিন্তু, জানা যায়, এই নম্বরের কোনও গাড়ি টোল প্লাজা দিয়ে যায়নি। এরপরই পুলিশ কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায় যে, আততায়ীরা আশেপাশেই আছে। সেইমতো চন্দ্রকোণা, ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি শুরু হয়। এতেই কাজ হয়।

ঝাড়গ্রাম থেকে পুলিশের হাতে প্রথম গ্রেফতার হয় নন্দ দাস। তাকে জেরা করেই পুলিশ জানতে পারে, বাকি অভিযুক্তরা বিভিন্ন জায়গায় ভাগ হয়ে গা ঢাকা দিয়েছে। হামলাকারীদের একজনের হাতে গুলি লেগেছে। সে ঘাটালে লুকিয়ে আছে। ঘাটাল থেকে সেই গুলিবিদ্ধ অভিযুক্ত এবং বরুণ ঘোষ নামে একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নার্সিংহোমের কর্মী বরুণকে অনেকে ডাক্তার নামেও চেনে।  এর মধ্যে আবার শ্রীনুকে খুনের অপারেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত শঙ্কর রাওয়ের কাছেও খবর পৌঁছে যায়, তার দলের একজনের হাতে গুলি লেগেছে। সে আবার সাহায্যের জন্য একজনের হাত দিয়ে টাকা পাঠায়। কিন্তু, টাকা পৌঁছে দেওয়ার আগেই সে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়। রাজেশকে জেরা করেই শঙ্কর রাওয়ের অবস্থান জানতে পেরে যায় পুলিশ। তারপর শঙ্কর এবং জামশেদপুরের সুপারি কিলারকে ধরে ফেলেন তদন্তকারীরা।

পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেছেন, ‘ডাক্তার ঘাটালের ছেলে। যার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। বরুণ ঘোষ। একজনের হাতে লাগে। বরুণ বলে বার করে দেবে। সেরকম প্রস্তুতিও নেয়। বাজার থেকে গজ কিনে আনেশঙ্কর রাও টাকা পাঠায় রাজেশ সাহুর হাত দিয়ে। যারা মাথা, যারা মারতে চেয়েছিল, এক এক করে গ্রেফতার করব। আউট অফ স্টেট গিয়ে গ্রেফতার করতে পারি। যাদের ধরেছি কনফেস করেছে কে লজিস্টিকস দিয়েছে, কে এগিয়ে দিয়েছে।’

এদিকে, শ্রীনু খুনের পর থেকে গোটা এলাকা এখনও থমথমে। আতঙ্কের ছাপ এলাকাবাসীর চোখেমুখে।