পূর্ব বর্ধমান: পরশুরামের  বিরিঞ্চিবাবা-র কথা সবাই জানেন। গল্পের সেই ভণ্ডবাবার বুজরুকি ধরা পড়ে গিয়েছিল। আর নয়নমণি রিয়েল ‘বিরিঞ্চি মা’!নয়নমণি আসলে স্বঘোষিত সন্ন্যাসিনী। বিরিঞ্চিবাবার সঙ্গে তুলনায় যাঁর জুড়ি মেলা ভার!

ইনিও বিশ্বাসকে হাতিয়ার করে অন্ধবিশ্বাস ছড়ানোর আরেক কারিগর!

স্থানীয় সূত্রে খবর, এক বছর অন্তর বাংলাদেশ থেকে পূর্ব বর্ধমানের কালনার বিদ্যানগরের এই রাধামাধব সেবাশ্রমে আসেন নয়নমণি।

তাঁর দাবি, খাওয়া তো দূর, তিনি নাকি ২৫ বছর ধরে জলস্পর্শও করেননি! আর ভগবান গোপাল নাকি তাঁর হাত থেকেই ভোগ গ্রহণ করেন!

এবিপি আনন্দের ক্যামেরায় স্বঘোষিত সন্ন্যাসিনীর এই বুজরুকি ফাঁস হয়ে গেল। সূর্য ডুবতেই সেবাশ্রমের মন্দিরে শুরু হল সন্ধ্যারতি। মিষ্টিভোগ হিসেবে প্লেটে সাজিয়ে দেওয়া হয়, দুটি রসগোল্লা, একটু দই। তারপরই ফেলে দেওয়া হয় পর্দা।

কিন্তু এ কী! দেখা গেল ভোগ নিবেদনের পরও তো প্লেটে সেই দুটি রসগোল্লা ও দই-ই পড়ে রয়েছে।

তাও মা নয়নমণির সাফাই, গোপাল ভোগ খেল তো।

আর এই স্বঘোষিত সন্ন্যাসিনীর মাহাত্ম্য প্রচারের অন্যতম কাণ্ডারী তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতা রঞ্জিত দেবনাথ। তাঁর দাবি, চারটের মধ্যে দুটো খেয়েছে গোপাল।

কিন্তু, মিষ্টি তো দু’টোই দেওয়া হয়েছিল! তড়িঘড়ি দেবনাথ বললেন, না না আমি দেখিনি, ওরা বলছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গোটাটাই গুজব।

বুজরুকি যে ফাঁস হয়ে গিয়েছে তা বুঝতে দেরি হয়নি মা নয়নমণি ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের।সন্ধের অন্ধকার গাঢ় হতেই গুটি গুটি পায়ে এলাকা ছাড়েন তাঁরা।

এসব যে ভণ্ডামি ছাড়া আর কিছুই নয়, বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যদের কথাতেও তা স্পষ্ট।

আর ২৫ বছর কোনও মানুষের পক্ষে কিছু না খেয়ে থাকা কি সম্ভব? চিকিত্সকরা ওই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন।

ঘটনার পর রাধামাধব সেবাশ্রমের কর্ণধার লক্ষ্মীপ্রিয়া বৈষ্ণবী ও তাঁর স্বামীকে থানায় নিয়ে গিয়ে সতর্ক করে দেয় পুলিশ।