শিলিগুড়ি: করোনা চিকিৎসায় অতিরিক্ত বিল, রোগীর পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার-সহ একাধিক অভিযোগ। কাঠগড়ায় শিলিগুড়ির সাতটি বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম। অভিযুক্ত প্রত্যেকটি হাসপাতালকেই শোকজ করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার এমনটাই জানিয়েছেন দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম। 


যদিও শোকজ করা নিয়ে সাতটি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। অন্যদিকে দার্জিলিং জেলার ২৭টি বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে, করোনার RAPID টেস্ট করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সূত্রের খবর, RAPID টেস্টের নামে অনেককে ভুয়ো পজিটিভ রিপোর্ট দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করতে বাধ্য করা হচ্ছিল। তা বন্ধ করতেই এই কঠোর পদক্ষেপ করেছে স্বাস্থ্য দফতর।


কখনও খাস কলকাতা, কখনও আবার জেলায়। করোনাকালে একাধিক অমানবিক ছবি সামনে এসেছে। ভুড়ি ভুড়ি অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে। মঙ্গলবারই এমন একটি ছবি সামনে আসে। ঘটনা পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের।


রোগীর মৃত্যুর পরও চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার হতে হল তাঁর পরিবারকে। করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে হারতে হয়েছে রোগীর। এদিকে হাসপাতালেও জমেছে বিলের পাহাড়। এই অবস্থায়, চিকিৎ‍সার বিল মেটাতে না পারায়, করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ আটকে রাখার অভিযোগ উঠল, পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। 


মৃতের পরিবারের বক্তব্য, গত ১২ মে দুর্গাপুরের দ্য নেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বাঁকুড়ার সোনামুখীর বাসিন্দা বছর ৭০-এর করোনা আক্রান্ত উমারানী বারুইকে। সোমবার ভোরে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। তিন সপ্তাহে হাসপাতালে প্রায় ৯ লক্ষ টাকা বিল হয়।


পরিবারের অভিযোগ, সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা দেওয়ার পরও, ডেথ সার্টিফিকেট দিতে চায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃতার ছেলে তন্ময় বারুই জানিয়েছেন, '৯ লাখ বিল, আমাদের বলেছিল টাকা দিলে বডি রিলিজ করবে, পুলিশ, মহকুমা শাসককে জানিয়েছি। কালকে সকালে মারা গেছে, এখনও বডি হস্তান্তর করেনি।' যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের পাল্টা দাবি, ডেথ সার্টিফিকেট নিতে হাসপাতালেই আসেননি মৃতের পরিজনেরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


মঙ্গলবার সন্ধেয় এই খবর সম্প্রচারিত হয় এবিপি আনন্দে। প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর রোগীর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় ডেথ সার্টিফিকেট। মকুব করা হয় বকেয়া বিলের সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা। মৃতার ছেলে তন্ময় বারুই বলেছেন, সংবাদমাধ্যম যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে, সেজন্য কৃতজ্ঞ, হাসপাতাল টাকা মকুব করেছে।