সনৎ ঝা, শিলিগুড়ি: স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখানো সত্ত্বেও, একটি সরকারি ও তিনটে বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরেও চিকিত্‍সা পরিষেবা মেলেনি বলে অভিযোগ। কার্যত বিনা চিকিত্‍সায় মৃত্যু হল ব্রেন স্ট্রোক আক্রান্ত শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার বাসিন্দা আব্দুল গফ্ফরের(৬৫)। ঘটনায় দোষ প্রমাণ হলে, ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। এনিয়ে শুরু হয়েছে তরজা।


আচমকা ব্রেনস্ট্রোক হওয়ায় সময় নষ্ট না করে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড সম্বল করে বেরিয়ে পড়েছিল পরিবার। কিন্তু একটি সরকারি ও তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরেও পরিষেবা মেলেনি বলেই তাদের অভিযোগ। এক সপ্তাহের মাথায়, কার্যত বিনা চিকিত্‍সায় মৃত্যু হল রোগীর।

গত ৬ জানুয়ারি ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি। পরিবারের দাবি, প্রথমেই রোগীকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়।  ভর্তি না নেওয়ায়, রোগীকে হিলকার্ট রোডের মুখার্জী নার্সিংহোম ও নেওটিয়া গেটওয়েল হেল্থকেয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও ফিরিয়ে দিলে নিয়ে যাওয়া হয় শিলিগুড়ির ডিসান হাসপাতালে।

অভিযোগ, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও, সবকটি হাসপাতালই রোগী ফিরিয়ে দেয়। মঙ্গলবার বাড়িতে মৃত্যু হয় রোগীর। মৃতের ছেলে বলেছেন, ‘স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড দেখানোর পর, জানানো হয় চিকিৎসা হবে না। মঙ্গলবার বাবা মারা গেলেন। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে যদি চিকিত্‍সাই না হয়, তাহলে লাভ কী? আমরা চাই, যাতে হেনস্থা না হয়। সরকার দেখুক।’

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের বক্তব্য, নিউরো চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় রোগীকে ভর্তি নেওয়া যায়নি। শিলিগুড়ির ডিসান হাসপাতাল ও নেওটিয়া গেটওয়েল হেল্থকেয়ারের দাবি, তাঁরা স্বাস্থ্যসাথীর আওতাভুক্ত নয়। তাই রোগীভর্তি নিতে পারেনি। মুখার্জী নার্সিংহোমের দাবি, তাদের ওখানে এই রোগের চিকিত্‍সা না হওয়ায় রোগীকে ফেরানো হয়েছে।

দার্জিলিঙের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য জানিয়েছেন, এখনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি-র দার্জিলিং জেলা সভাপতি প্রবীণ আগরওয়াল বলেছেন, ‘শুধু প্রচারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী বিলি করছেন। আমরা প্রথম থেকেই বলছি, এসব মিথ্যে প্রতিশ্রুতি। ইচ্ছে করে আয়ুষ্মান ভারত প্রচার করতে দিচ্ছে না।’ এদিকে, দার্জিলিং-র তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেছেন, ‘১৪টি নার্সিংহোমের সঙ্গে কথা হয়েছে। আরও ৪০টির সঙ্গে কথা চলছে। কোথাও অভিযোগ এলে গ্রিভান্স সেল খোলা হয়েছে। সমস্যা থাকবে না।’