সিঙ্গুর: সিঙ্গুরে অকাল হোলি।মনে আনন্দ, চোখে জল.....এক দশকের আশা-আশঙ্কার দীর্ঘ দোলাচলের পর শেষপর্যন্ত দিশা দেখল সিঙ্গুর।
কারণ, সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে ১২ সপ্তাহের মধ্যে জমি ফেরত দিতে হবে কৃষকদের। আর এই রায় শুনে চোখের জল চেপে রাখতে পারছেন না সত্তরোর্ধ্ব বিশ্বনাথ দাস। হয়তো এই দিনটার জন্যই অপেক্ষায় ছিলেন এই বৃদ্ধ। সেদিন চাপ এসেছিল, জমি ছাড়তে হবে বলে। কিন্তু, রাজি হননি বিশ্বনাথ। মাটির টানে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু, পারেননি......হাত থেকে চলে গিয়েছিল নিজের শেষ সম্বল। বুকফাটা আর্তনাদেও লাভ হয়নি, পুলিশের লাঠি বয়সের তোয়াক্কা করেনি। এতদিন ধরে চেপে রাখা সেই যন্ত্রণার আজ উপশম...সুপ্রিম কোর্টের রায়।
বেড়াবেড়ির অষ্টুরানি কোলেরও একমাত্র সম্বল ছিল তাঁর জমি। জমিতে চাষ করেই হত দিন গুজরান। কিন্তু, ন্যানোর হাতছানিতে সেদিন জমি হাতছাড়া হয়েছিল অষ্টুরানির। তারপর থেকে শুধুই অভাব আর অনটনের সাক্ষী এই কোলে পরিবার। কোনও মতে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেকে পাঠাতে হয়েছে মুম্বইয়ে সোনার কাজ করতে। কিন্তু, আজ জমি থাকলে সেই জমিতেই তো ফলত সোনা। তবে এই আক্ষেপ এখন উধাও। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে জমি ফেরত পাওয়ার আশায়-আনন্দে উদ্বেল অষ্টুরানি কোলে।
সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানা চত্বরে রয়েছে কমল দাসের ৪ বিঘা জমি। যে জমিতে একসময় হই হই করে ফসল ফলত, সেই জমিতেই এখন শিল্পায়নের পাঁচিল। রোজ যেতেন, নিজের জমিটা চোখের দেখা দেখতে। কিন্তু, ওইটুকুই....আর কিছু করার ক্ষমতা ছিল না বেড়াবেড়ির কমলের।
বুধবার আদালতের রায়ে বুকে বল পেলেন তিনি। জমিতে আবার ফসল ফলানোর স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
এক সময় সিঙ্গুরের দো-ফসলি, তিন ফসলি জমি খাদ্য জোগাতো গোটা রাজ্যকে। কিন্তু, গত কয়েক বছর ধরে সেই সিঙ্গুরকেই মুখে তুলতে হয়েছে দু’ টাকা কেজি দরের চাল। কিন্তু, আশা ছাড়েনি সিঙ্গুর। সিঙ্গুরের জমি আবেগ জন্ম দিয়েছিল জমি আন্দোলনের। আজ তারই ফসল ঘরে তুলল সিঙ্গুরবাসী।
জমিতে ফের সবুজের স্বপ্নে বুক বাঁধছে আনন্দে উদ্বেল সিঙ্গুর
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
31 Aug 2016 01:53 PM (IST)
NEXT
PREV
রাজ্য (states) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -