নয়াদিল্লি: ২০০৬-এ সিঙ্গুরে বাম সরকারের জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া অবৈধ ছিল। জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ধাক্কা খেল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিগত বাম সরকার। জয়ী হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধাক্কা খেল টাটা মোটর্সও।

আদালত সূত্রে খবর, মূলত আটটি পয়েন্টের ভিত্তিতে বুধবার সিদ্ধান্তে পৌঁছয় বিচারপতি গোপাল গৌড়া এবং বিচারপতি অরুণ মিশ্রর বেঞ্চ। যদিও, কয়েকটি ক্ষেত্রে দুই বিচারপতি একমত হতে পারেননি। এদিন রায়দান পর্বের শুরুতেই বিচারপতি গোপাল গৌড়া বলেন,

এই অধিগ্রহণ কি আদৌ জনস্বার্থে? একটি বেসরকারি সংস্থার জন্য জমি অধিগ্রহণ কী করে জনস্বার্থে হতে পারে? বেসরকারি সংস্থার জন্য জমি অধিগ্রহণের যে নিয়ম, তা যথাযথভাবে মানা হয়নি।

যদিও বিচারপতি অরুণ মিশ্র বলেন, আমার মনে হয়, তৎকালীন সরকার জনস্বার্থেই জমি অধিগ্রহণ করেছে। এই কারখানা বলে কর্মসংস্থান হত।

অধিগ্রহণের পদ্ধতি সম্পর্কে বিচারপতি গোপাল গৌড়া বলেন, অধিগ্রহণ সম্পর্কে যথাযথভাবে নোটিস দেওয়া হয়নি। ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ধার্য করার ক্ষেত্রেও নিয়ম মানা হয়নি।

এক্ষেত্রেও একমত হতে পারেননি বিচারপতি অরুণ মিশ্র। তিনি বলেন, প্রত্যেককে নোটিস না পাঠিয়ে গেজেট নোটিফিকেশন করাই ঠিক। তৎকালীন সরকার সেটাই করেছে। আর ক্ষতিপূরণের পরিমাণ অপর্যাপ্ত ছিল বলেও মনে করি না। জমিদাতারা যখন ক্ষতিপূরণ নিয়েছেন, তখন টাকার অঙ্ক নিশ্চয় বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল।

তবে সব মিলিয়ে জমি অধিগ্রহণ পদ্ধতি যে অবৈধ সেবিষয়ে একমত হয় দুই বিচারপতিই। বিচারপতি অরুণ মিশ্র বলেন, টাটার প্রকল্প সিঙ্গুর থেকে গুজরাতে চলে গিয়েছে। এই প্রকল্প থাকলে রাজ্যের লাভ হত। শুধু শুধু জমি ফেলে রাখার কোনও প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। আমি মনে করছি এই জমি ফেরত দিয়ে দেওয়া উচিত।

এই মামলার বিচারপর্বে টাটার পক্ষ থেকে বলা হয়, সিঙ্গুরে তাদের কারখানার নির্মাণকাজ শুরু হয়েছ। ফলে সেই জমি আর কৃষিকাজের উপযুক্ত নেই। সেকথা মাথায় রেখে বিচারপতিরা এদিন বলেন, রাজ্য সরকারকে পাশের মৌজায় এমন জমি চিহ্নিত করতে হবে, যেখানে কৃষিকাজ করা সম্ভব। তারপর ১২ সপ্তাহের মধ্যে সেই জমি ফেরত দিতে হবে জমিদাতাদের।

বাবল আউট