এদিন সিঙ্গুরের সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে টাটাদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একমাস সময় আছে ভেবে দেখুন। একমাসের মধ্যে আমাকে জানান। গোয়ালতোড়ে এক হাজার একর জমি আছে। টাটা হোক বা বিএমডব্লু। অটো ইন্ডাস্ট্রি করতে চাইলে ফিনান্স মিনিস্টারের সঙ্গে কথা বলুন। জেদাজেদি করতে গিয়ে টাটা বাবুরা সিঙ্গুরে কারখানাই করতে পারলেন না।
তবে, এ-ও বুঝিয়ে দিলেন সরকার ল্যান্ড ব্যাঙ্ক থেকে জমি দেবে, কিন্তু জোর করে জমি অধিগ্রহণ করবে না। মমতা বলেন, কৃষিও চাই। শিল্পও চাই। জোর করে জমি নেওয়ার বিরোধী।
গোয়ালতোড়ের যে জমিতে টাটা গোষ্ঠীকে শিল্পের প্রস্তাব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিলেন, ছয়ের দশকে বিধানচন্দ্র রায়ের আমলে পাটজাত দ্রব্য তৈরির একটি সংস্থার জন্য এই জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ল্যান্ডব্যাঙ্কের জন্য জমির খোঁজ করতে গিয়ে এই জমির খোঁজ পান। এরপরই ১০০ একর জমি সংস্থার জন্য রেখে বাকিটা ল্যান্ডব্যাঙ্কের জন্য অধিগ্রহণ করে তৃণমূল সরকার।
কিন্তু, শেষপর্যন্ত সিঙ্গুরে কী হবে? শুধুই কৃষি না শিল্পও? অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, সুপ্রিম কোর্ট জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াকে বেআইনি বলেছে। অর্থাৎ জমি অধিগ্রহণ সঠিক হলে শিল্প গড়তে কোনও অসুবিধাই নেই। অর্থনীতিবিদ সৈকত সিংহ রায় বলেন, বড় বিনিয়োগ আসবে কিনা, এই যে প্রশ্নগুলো উঠছে সিঙ্গুর ঘিরে। তার অবসান হল। এটা স্পষ্ট হল অধিগ্রহণে ত্রুটি না থাকলে জমি অধিগ্রহণ হতেই পারে। ত্রুটিমুক্ত হতে হবে।
আর যাঁর আমলে সিঙ্গুরে কারখানা গড়ার যাবতীয় উদ্যোগ সেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এদিন নিজেকে বন্দি করে রেখেছিলেন আলিমুদ্দিনেই। সিঙ্গুরের জমি ফেরত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও উত্তরও দিতে চাননি।
আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন সিঙ্গুরে বিজয় উৎসব পালন করছেন।