উত্তর ২৪ পরগনা: বসিরহাটে অশান্তির পর বুথে বুথে শান্তি বাহিনী তৈরির সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীর। শান্তি চাইছে বসিরহাট-বাদুরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষও। হিন্দু হোক কিংবা মুসলমান। দুষ্কৃতী তাণ্ডবের সমালোচনায় সরব সকলেই।


সোশাল মিডিয়ায় একটা আপত্তিকর পোস্ট। অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ার পরও অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। আগুন, গাড়ি ভাঙচুর। বসিরহাট, বাদুড়িয়া-সহ উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় অশান্তি।


কিন্তু, গত কয়েকদিন ধরে চলা এই দুষ্কৃতী তাণ্ডবে সায় নেই এলাকাবাসীর বড় অংশেরই। হিন্দু হোক কিংবা মুসলমান। দুষ্কৃতী তাণ্ডবের সমালোচনায় সরব সকলেই। তাঁরা বলছেন, এসব বন্ধ হোক। এক স্থানীয় বাসিন্দা বললেন, হিন্দু মুসলমান একসঙ্গে বাস করি। একসঙ্গেই থাকতে চাই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বাকযুদ্ধ চলছে। সবপক্ষই যুদ্ধংদেহী মেজাজে।


কিন্তু বসিরহাট ও বাদুরিয়ার সব সম্প্রদায়ের মানুষই বলছে, এবার শান্তি ফিরুক এলাকায়। কারণ, অশান্তিতে ক্ষতি হয় সাধারণ মানুষেরই। এক স্থানীয় বাসিন্দা বললেন, আমরা মিলে মিশে থাকতে চাই। আরেকজন বললেন, শান্তি চাই। হিন্দু-মুসলমান ভাই-ভাই।


জায়গায় জায়গায় দুই গোষ্ঠীর জটলা যেমন রয়েছে, তেমনই সাধারণ মানুষও একযোগে বলছে অচলাবস্থার অবসান হোক। একজন বললেন, প্রশাসন বিচার করুক। আমাদের রক্ত দেখে কাজে যাই না।


গত কয়েকদিনের সংঘর্ষে এখনও থমথমে বসিরহাট-বাদুরিয়া-সহ উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকা। বন্ধ দোকানপাট! শুনশান রাস্তাঘাট! জনজীবনে তীব্র আতঙ্ক। নিজের এলাকাতেই স্বাভাবিকভাবে ঘোরাফেরা করতে পারছেন না সাধারণ মানুষ! ব্যাহত জনজীবন। প্রয়োজন সত্ত্বেও জরুরি কাজে বাইরে বেরোতে পারছেন না মানুষ।


সকালের দিকে তেমনভাবে পুলিশের দেখা না মিললেও, বেলা বারোটার পর সক্রিয় হয় তারা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে বেশ কয়েকটি জায়গায় টহল দেয় পুলিশ। বিএসএফ এলাকা ঘুরছে। চারদিক থমথমে।


তবে বাস্তবে দেখা গিয়েছে, পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী যেখানে টহল দিয়েছে, সেইসময় সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু অশান্তি ছড়িয়েছে অন্য জায়গায়।


অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিমূলক প্রচারের জেরে পরিস্থিতি যাতে আরও অশান্ত না হয়, তার জন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে বাদুড়িয়া, বসিরহাট, দেগঙ্গার বিস্তীর্ণ এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।


এদিকে, বসিরহাট-বাদুরিয়ায় উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বুথে বুথে শান্তিবাহিনী তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, বুথে বুথে শান্তিবাহিনী তৈরি হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সক্রিয় হয়েছে প্রশাসন। পুলিশের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। লক্ষ্য একটাই যত দ্রুত সম্ভব শান্তি ও সুস্থিতি ফেরানো।