নয়াদিল্লি ও কলকাতা: বারাসত, বাদুড়িয়ার অশান্তিকে কেন্দ্র করে রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর 'সংঘাতে'র প্রেক্ষাপটে দুজনের সঙ্গেই কথা বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। আলাদা আলাদা কথা বলে তাঁদের কাছে তিনি উত্তর ২৪ পরগণার সাম্প্রতিক পরিস্থিতির ব্যাপারে খোঁজ নেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও রাজ্য সরকারের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছে।


একটি ফেসবুক পোস্টের জেরে ছড়ানো অশান্তি মোকাবিলা করে শান্তি ফেরাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, জানতে চাওয়া হয়েছে রিপোর্টে। সূত্রের খবর, রাজনাথকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল, উভয়েই নিজ নিজ অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। সব শুনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সৌহার্দ্য, যার যার পদমর্যাদা, সম্মান বজায় রেখে মতবিরোধ মিটিয়ে নিতে বলেছেন দুজনকেই।


অশান্তির পর এখনও থমথমে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট, বাদুরিয়া সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। এই পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের কথোপকথন ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক সংঘাতও। কলকাতা পেরিয়ে তার আঁচ পৌঁছেছে দিল্লির সাউথ ব্লক পর্যন্ত। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালকে ফোন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সূত্রের দাবি, দু’জনকেই তিনি বলেন, আপনারা সাংবিধানিক পদে আসীন। তার মর্যাদা রেখে কথা বলুন। বসিরহাটের পরিস্থিতি নিয়েও রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে খোঁজখবর নেন রাজনাথ।


একদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করছেন, তখন রাজ্য বিজেপি একধাপ এগিয়ে ৩৫৬ ধারা জারির দাবি জানিয়েছে রাজ্য বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ৩৫৬ ধারা জারি করা হোক। পদত্যাগ করুন মমতা। কিন্তু, বসিরহাট ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া সমালোচনায় সরব হলেও, বিজেপির ৩৫৬ ধারা জারির দাবির পক্ষে নয় বামেরা। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারির মতো পরিস্থিতি নেই। বিজেপি অন্য খেলা খেলছে।


এদিন দুপুর তিনটেয় রাজনাথ সিংহর সঙ্গে দেখা করে বসিরহাটের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। কিন্তু, তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, মমতা-রাজ্যপাল সংঘাত নিয়ে দিল্লির কংগ্রেসের সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের সুর মিলছে না। দলের জাতীয় মুখপাত্র সুস্মিতা দেব বলেন, মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যপালদের ব্যবহার করা হচ্ছে। কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে বরখাস্ত করা উচিত।


সেখানে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর গলা ভিন্ন সুর। তিনি বলেন, আমরা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেছি। মনে হয় ভদ্রলোক। মুখ্যমন্ত্রীকে কী বলেছেন, সেটা তো মমতা বলছেন না। তাহলে বুঝব। পিসি করে গালাগাল করা ঠিক নয়।


রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক তিক্ত। উল্টোদিকে দিল্লিতে সনিয়ার সঙ্গে মমতার সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল। তাই হয়ত মমতা-রাজ্যপাল সংঘাত ইস্যুতে দুই সুর কংগ্রেসের..