পার্থপ্রতিম ঘোষ ও ঋত্বিক মণ্ডল, সোনারপুর: সোনারপুরে বেআইনি ভ্যাকসিন ক্যাম্প-কাণ্ডে নতুন তথ্য। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, হিসেব ঠিক রাখতে রেজিস্টারে কারচুপি করে টিকা চুরি করতেন স্বাস্থ্য দফতরের ওই কর্মী। 


ডায়মন্ড হারবারে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে বলে খাতায়-কলমে দেখালেও তা দেওয়া হতো সোনারপুরে। বেআইনি ভ্যাকসিন ক্যাম্প-কাণ্ডে জেলা প্রশাসনের তদন্তে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। 


পুলিশের দাবি, ধৃত স্বাস্থ্য কর্মী জেরায় ভ্যাকসিন বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করলেও, তদন্তে জানা যায় ৩০০-৫০০ টাকায় বিক্রি করা হতো ভ্যাকসিন। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ জনকে বেআইনিভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। 


কীভাবে ডায়মন্ড হারবারের স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে টিকা চুরি হল তা জানতে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পুলিশ। পাশাপাশি, ডায়মন্ড হারবারে যাচ্ছে তদন্তকারীদের একটি দল।


ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডের রেশ কাটার আগেই এবার ভ্যাকসিন দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে। 


অভিযোগ ওঠে, সরকারি ভ্যাকসিন চুরি করে বাইরে বিক্রির। এই ঘটনায় শুক্রবারই গ্রেফতার হন খোদ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট। 


ধৃত মিঠুন মণ্ডল ডায়মন্ড হারবারের পঞ্চগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট। একইসঙ্গে, তিনি মশাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভ্যাকসিন কোঅর্ডিনেটর হিসেবেও কাজ করতেন।


কীভাবে চলত এই বেআইনি ভ্যাকসিন চক্র? পুলিশ সূত্রে দাবি, নষ্ট হওয়া বা ভায়াল ভেঙে যাওয়ার কথা মাথায় রেখে, প্রতিটি কেন্দ্রেই কিছু অতিরিক্ত ভ্যাকসিন পাঠানো হয়। 


পুলিশ সূত্রে দাবি, অভিযুক্ত সেগুলিই চুরি করে বিক্রি করত। পরে, তা কোউইন অ্যাপে আপডেট করে দিত। শুক্রবার সোনারপুরের রূপনগরে বেআইনি ভ্যাকসিন ক্যাম্পে হানা দেয় পুলিশ। উদ্ধার হয় কোভিশিল্ডের দুটি ভায়াল। অভিযুক্ত নিজেই ভ্যাকসিন দিতেন বলে অভিযোগ।


সূত্রের খবর, অভিযুক্তকে জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, টাকার বিনিময়ে ৩০ থেকে ৪০ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। সোনারপুরের যে বাড়িতে ক্যাম্প হয়েছিল, ভ্যাকসিন নেন তার মালিকও।


দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ৪ সদস্যের তদন্তকারী দল তৈরি করা হয়েছে। এর সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভ্যাকসিনগুলি আসল না নকল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাও।