খড়গপুর: খড়গপুরের ডন শ্রীনু নায়ডুর খুনের নেপথ্যে কি রাজনীতি রয়েছে? সাত অভিযুক্তের গ্রেফতারির পর পুলিশ সুপারের মন্তব্য ঘিরে এই জল্পনা তুঙ্গে। পুলিশের দাবি, শ্রীনুকে খুনের পুরো ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে শঙ্কর রাও নামে শ্রীনুর এক পুরনো শত্রু।


তৃণমূলের অভিযোগ, এই শঙ্কর একদা বিজেপি করত।  তৃণমূল নেতা প্রদীপ সরকার বলেছেন, ‘শঙ্কর রাও একসময়ে বিজেপি করত। এছাড়া অভিযুক্তদের একজনের পরিবার বিজেপির সঙ্গে জড়িত। মাফিয়ারা এখন বিজেপির সঙ্গে।’

বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বিষয়টি কার্যত অস্বীকার করে গিয়েছেন। সেই সঙ্গে এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তও দাবি করেছেন তিনি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেছেন, ‘আমি জানি না কারা বিজেপি। শ্রীনু মারা যাওয়ার পর নাম শুনছি। সিবিআই তদন্ত হোক।’

বিজেপি রাজ্য সভাপতি দাবি করছেন, শঙ্করকে তিনি জানেন না! কিন্তু, পশ্চিম মেদিনীপুরে তাঁর দলের সহ সভাপতি শঙ্করকে চিনতে পেরেছেন।  বিজেপি-র পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সহ-সভাপতি প্রেমচাঁদ ঝা বলেছেন, ‘শঙ্কর রাও আমাদের দল অনেক দিন আগে ছেড়েছে। এখন যোগাযোগ নেই।’

শ্রীনু খুনে জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার শঙ্করকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। এখন প্রশ্ন হল, এই শঙ্করকে জেরায় কি কোনও চাঞ্চল্যকর তথ্য বা নাম বেরিয়ে আসতে পারে?  পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেছেন, ‘শ্রীনুর ক্ষমতা বাড়লে, সে একটা ইউথ লিডার হয়ে গেলে আমাদের ক্ষতি হবে, এইটা চিন্তা করে কতগুলো বড় বড় মাথা। তারা স্টেটের বাইরে গিয়ে মিটিং করে। ঘটনার পিছনে যারা মাথা, যারা নিজেদের স্বার্থে শ্রীনুকে মারতে চেয়েছিল। তারা জানত শ্রীনুকে মারলে খ্ড়গপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হবে। সেই মাথাদের আমরা একে একে গ্রেফতার করব।’

শ্রীনু খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের সঙ্গে রাজনীতির যোগ আছে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেছেন, ‘এটা এই মুহূর্তে তদন্তের স্বার্থে বলছি না। আপনারা আস্তে আস্তে জানতে পারবেন। ঘটনার পিছনে বড় বড় মাথা আছে। আমরা যেমন যেমন ধরব, আপনারা জানতে পারবেন।’

কান টানার পর এবার কি মাথা বেরিয়ে আসতে পারে? আগামী দিনে শ্রীনু খুনই কি ফের রাজনৈতিক ঝড় তুলতে পারে? ইতিমধ্যেই শ্রীনু হত্যায় সরাসরি বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা খড়গপুরের বিজেপি বিধায়ক দিলীপের দিকে আঙুল তুলেছে তৃণমূল। পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন দিলীপও। তিনি মানহানির মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

খড়গপুরের ডনের ঘনিষ্ঠদের দাবি, টাকা উপার্জনের সঙ্গে সঙ্গে শ্রীনুর রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খাও ছিল প্রবল। তাই হাওয়া বুঝে সে কখনও বিজেপি, কখনও তৃণমূলের কাছে গিয়েছে বলে অভিযোগ। সেই শ্রীনুর মৃত্যু ঘিরে তরজায় জড়াল তৃণমূল-বিজেপি।