কিন্তু এটুকু বাদ দিলে বাকি বক্তৃতায়, সিপিএম-কংগ্রেসের নামই প্রায় মুখে আনেননি তিনি। বিজেপি-মোদি সরকারকেই বার বার আক্রমণ করেন। কিন্তু সিপিএম, কংগ্রেসকে উপেক্ষা?
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, সিপিএম এখন রাজ্যে ক্ষয়িষ্ণু শক্তি। একের পর এক নির্বাচনে তাদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সিপিএমকে জোরদার আক্রমণ করা হলে উল্টে তাদের গুরুত্ব দেওয়া হবে। সম্ভবত এ কথা মাথায় রেখেই সিপিএমকে নিয়ে বাড়তি শব্দ খরচ করলেন না তৃণমূলনেত্রী।
তা হলে কংগ্রেসকে কেন উপেক্ষা করলেন মমতা? রাজনৈতিক মহলের একাংশে প্রশ্ন, মোদির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে এবং কংগ্রেসকে চাঁছাছোলা ভাষায় আক্রমণ না করে কি ২০১৯-এর জন্য দরজা খোলা রাখলেন মমতা? মমতার কংগ্রেসকে ‘উপেক্ষার নেপথ্যে আরও একটি কারণ রয়েছে বলে মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের।
তাদের বক্তব্য, কংগ্রেস যাঁরা ছাড়ছেন, তাঁরা তো তৃণমূলেই আসছেন। এ দিনও একাধিক জনপ্রতিনিধি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। মানস ভুঁইয়ার তৃণমূলে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও জল্পনা জোরদার। তাই কংগ্রেস ভাঙলে যখন তৃণমূলেই আসছে, তখন আর অযথা সেই দলকে আক্রমণ করে লাভ কী? একথা মাথায় রেখেও মমতা উপেক্ষা করে থাকতে পারেন বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের একাংশের। তবে বিজেপিকে আক্রমণ এবং কংগ্রেস, সিপিএমকে উপেক্ষার নেপথ্যে মমতার আরও একটি রণকৌশলও থাকতে পারে বলে ধারণা কারও কারও।
তাঁদের মতে, রাজ্যে এখনও প্রধান বিরোধী শক্তি কংগ্রেস ও বাম। কিন্তু, লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল বিজেপিকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে, এমন ধারণা তৈরি হলে বিরোধী ভোটের একটা অংশ বাম-কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের জোড়া লাভ। একদিকে, অধীর-সূর্যদের জোট আরও ধাক্কা খাবে। অন্যদিকে মুসলিম ভোট আরও বেশি করে তৃণমূলের দিকে ঝুঁকবে, এমনটাও হতে পারে বলে মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের।