কলকাতা:  পরীক্ষাকেন্দ্রে নজরদারি ছাড়া, মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের অন্যান্য দায়িত্বে এবার আধিকারিকদের কাজে লাগাতে চায় সরকার। নির্দেশিকা পৌঁছেছে পর্ষদ ও সংসদের কাছে। সুষ্ঠু পরীক্ষা ব্যবস্থার স্বার্থে এই উদ্যোগ, জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।


পরীক্ষাকেন্দ্রে নজরদারি ছাড়া এই দুটি পরীক্ষার প্রতিটি ধাপের সঙ্গে এবার থেকে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত থাকবেন সরকারি আধিকারিকরা।

এরফলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের ক্ষমতা অনেকটাই কমে যাবে। বর্তমানে বোর্ডের এই দুই পরীক্ষার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাই পরীক্ষাকেন্দ্রে নজরদারি চালান। গুরুদায়িত্ব থাকে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাঁধে। এ ছাড়াও পরীক্ষা-ব্যবস্থার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকেন বহু শিক্ষক। আর এই জায়গাতেই এবার সরকারি আধিকারিকদের ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য প্রশাসন।

আগামী ১২ মার্চ শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষার্থী প্রায় ১১ লক্ষ। উচ্চমাধ্যমিক শুরু হচ্ছে ২৭ মার্চ, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৮ লক্ষ।

দুটি ক্ষেত্রেই এবার নয়া পদ্ধতি চালু করতে চাইছে সরকার।

সূত্রের খবর, বর্তমানে মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রাখার জন্য, প্রতিটি জেলায় পর্ষদের একজন প্রতিনিধি থাকেন। ওই পদে শিক্ষকরা থাকতে পারেন।

উচ্চমাধ্যমিকে জেলাভিত্তিক যে উপদেষ্টা কমিটি তৈরি হয়, সেখানেও সদস্য হিসেবে শিক্ষকরা জায়গা পান।

অভিযোগ, মূলত এই দুটি জায়গা দিয়েই ঢুকে পড়েছে অনিয়ম! যেখানে পরীক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে নানাভাবে ছড়ি ঘোরাতে দেখা যাচ্ছে শিক্ষক নেতাদের একাংশকে!

সম্প্রতি এ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেয় তৃণমূল অনুগামী শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সংগঠন।

তারা অভিযোগ করে, মাধ্যমিক জেলা আহ্বায়ক এবং অ্যাডিশনাল ভেনু সুপারভাইজার পরিচয় দিয়ে, পরীক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে নাক গলাচ্ছেন শিক্ষকদের একাংশ।

বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এই ছবিই এবার বদলাতে চাইছে সরকার।

সম্প্রতি একটি ম্যাপ দেখিয়ে বিজেপি দাবি করে, পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু স্কুলে মাধ্যমিকের টেস্টে, এই ম্যাপটি পয়েন্টিংয়ের জন্য দেওয়া হয়েছিল।

যেখানে কাশ্মীরের দুটি অংশ ও অরুণাচল প্রদেশের একটি অংশকে ভারতের বাইরে দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ। বিজেপি দাবি করে, তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের কাছ থেকে ম্যাপটি নিয়েছিল স্কুলগুলি।

যদিও সব অভিযোগ উড়িয়ে এটাকে বিজেপির চক্রান্ত বলে দাবি করে রাজ্য সরকার। তদন্তভার দেওয়া হয় সিআইডিকে। এই ঘটনা বিড়ম্বনায় পড়ে প্রশাসন। সে কারণেই কি এবার মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে সরকারি আধিকারিকদের জুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? যাতে পরীক্ষায় স্বচ্ছতা থাকে এবং কোনও ধরণের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কেউ কোনও ধরণের অনৈতিক হস্তক্ষেপ করতে না পারে? প্রশ্ন শিক্ষমহলে।