বাসন্তী:  হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে জলে ডুবে যাওয়া শিশুকে তুলে ঝাড়ফুঁক! পুকুরের জলকে লাঠিপেটা! ঝাড়ফুঁক শেষে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা চিকিৎসকদের। দক্ষিণ ২৪ পরগদনার বাসন্তীতে কুসংস্কারের বলি শিশু!!


পুকুরে পড়ে যাওয়া শিশুকন্যাকে মাথায় তুলে নাচ...!স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার বদলে জলে দাঁড়িয়েই ইমামের ঝাড়ফুঁক...! ভূত ছাড়াতে পুকুরের জলকেই লাঠিপেটা...! শেষমেশ চিকিৎসার অভাবে শিশুকন্যার অকাল-মৃত্যু। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে কুসংস্কারের বলি ২ বছরের শিশু। মৃতের নাম তাজমিরা খাতুন।


কয়েকদিন আগে বাবা-মায়ের সঙ্গে বাসন্তীর ভাঙনখালিতে মামার বাড়িতে ঘুরতে এসেছিল সে। এদিন সকাল ১১টা নাগাদ বাড়ির সামনে খেলা করছিল তাজমিরা। খেলতে খেলতে হঠাত্‍ নিখোঁজ হয়ে যায়। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। কোথাও তাজমিরাকে না পেয়ে বাড়ির পিছনের পুকুরে খুঁজতে শুরু করেন পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা। জল থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শিশুকন্যাকে।


ভাঙনখালি থেকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল ৫ কিলোমিটার। দেড় কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে শিমূলতলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু জল থেকে উদ্ধারের পর কোনও জায়গাতেই নিয়ে যাননি পরিবারের লোকোরা। উল্টে ডেকে আনা হয় স্থানীয় ইমামকে। জলের মধ্যেই ঝাড়ফুঁক শুরু করেন ইমাম। জল থেকে ভূত তাড়াতে শুরু হয় জলকে লাঠিপেটা।


কিন্তু এবার কাজ করেনি ইমামের ঝাড়ফুঁক। বেশ কিছুক্ষণ তুকতাক করার পর শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।


এগোচ্ছে বিজ্ঞান। এগোচ্ছি আমরা। কিন্তু এই সময়ে দাঁড়িয়েও মধ্যযুগীয় কুসংস্কারে ভর করে পিছন দিকে হেঁটে চলেছেন কেউ কেউ। তাই কোথায় জুটছে ডাইনি অপবাদ, কোথাও ভূত তাড়াতে গিয়ে প্রাণ যাচ্ছে একরত্তি শিশুর।


আধুনিক এই সমাজের একাংশের মানসিকতায় এখনও ডালপালা ছড়াচ্ছে মধ্যযুগীয় কুসংস্কার!! জীবন দিয়ে মাসুল গুণছে তাজমিরারা।