কলকাতা: কীভাবে মুখোমুখি বসানো গেল অভিষেক-শুভেন্দুকে? দু’জনে কী বললেন বৈঠকে? বৈঠকের সিদ্ধান্তই বা কী হল? মধ্যস্থতাকারী সৌগত রায়ের মোবাইল ফোনের স্পিকার মোডে শুভেন্দুকে কী বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এবিপি আনন্দের প্রতিনিধিকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে জানালেন সৌগত রায়।
প্রবীণ তৃণমূল নেতার দাবি, সব সমস্যা মিটে গিয়েছে। তিনি বলেন, বরফ গলানোর জন্য প্রয়োজন ছিল মুখোমুখি বৈঠক। অভিষেক (বন্দ্যোপাধ্যায়) যুব তৃণমূলের সভাপতি। তাঁর সঙ্গে বৈঠকের ফলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে।
কী করে এই অসাধ্যসাধন সম্পন্ন হল?
সৌগত বলেন, দু-তিনটে ধাপে করা হয়েছে। এর আগে দুবার শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠকে বসেছি। ওর যা যা বক্তব্য ছিল, শুনে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছি। তাঁর প্রতিক্রিয়া পেয়েছি।
এরপর একদিন অভিষেক ও প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সুদীপের (বন্দ্যোপাধ্যায়) বাড়িতে বসেছিলাম। সেখানেই শুভেন্দুর সঙ্গে মুখোমুখি বসতে আগ্রহ দেখায় অভিষেক। শুভেন্দু রাজি হয়। তিনি যোগ করেন, বৈঠক হওয়ার কথা ছিল গত শনিবার। কিন্তু, শুভেন্দুর মায়ের শরীর খারাপ হওয়ায় মঙ্গলবার হয়।
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, মঙ্গলবারের বৈঠক গোটাটাই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে হয়েছে। শুভেন্দু নিজের বক্তব্য পেশ করে। তাতে সাড়া দেয় অভিষেক। মাঝেমধ্যে পিকে-ও কথা বলেছে।
অন্যদিকে, সুদীপ ও আমার ভূমিকা ছিল মধ্যস্থতাকারীর। আমরা সকলেই শুভেন্দুকে বলেছি, তোমাকে থাকতে হবে, কাজ করতে হবে। এই কথা বলতে বলতেই ভুল বোঝেবুঝি কেটে যায়। সেখানেই স্থির হয়, শুভেন্দু থাকবে ও সক্রিয় দায়িত্ব নিয়েই দলের কাজ করবে।
সৌগত রায়ের মতে, শুভেন্দু-অভিষেকের মধ্যে সাংগঠনিক সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। শুভেন্দু পাঁচ বছর যুব তৃণমূলের সভাপতি ছিল। অভিষেক বর্তমান সভাপতি। দুপক্ষেরই সমর্থক রয়েছে সর্বত্র।
বৈঠকের পর কী সিদ্ধান্ত হল?
সৌগত বলেন, এটাই সিদ্ধান্ত হল যে দুজনে একসঙ্গে কাজ করবে। শুভেন্দু তাঁর সিদ্ধান্ত দু-একদিনের মধ্যে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানাবে।
সৌগত জানান, তিনি বৈঠকের নির্যাস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানান। তখন মুখ্যমন্ত্রী মোবাইল ফোনের স্পিকার মোডে উপস্থিত সকলকে একসঙ্গে চলার বার্তা দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা একটা পরিবারের মতো। দলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অন্যেরা দলে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করবে। সেগুলি শুনলে চলবে না। দলটাই সব। দল দুর্বল হলে আমরা কেউ কোথাও থাকব না।
সাংসদ যোগ করেম, এরপর আলাদা করে অভিষেক ও শুভেন্দুর সঙ্গেও কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। দুজনের কেউ-ই পুরনো কথা তোলেননি। কথা শেষে শুভেন্দু বলেন, "হ্যাঁ দিদি ঠিক আছে...।"