কলকাতা: শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে জলঘোলা অব্যাহত। সর্বশেষ খবর, শুভেন্দু রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবেন। তিনি দলেই থাকছেন নাকি দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন, তা পরিষ্কার হবে সেদিনই। আজ দুপুর থেকে গতকাল রাতে তৈরি হওয়া পট আচমকা বদলে যায়। গতকাল রাতে দলের তরফে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় জানিয়েছিলেন, সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামের বিদ্রোহী বিধায়কের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশান্ত কিশোরের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের পরই সৌগত দাবি করেছিলেন, সব সমস্যা মিটে গিয়েছে। তৃণমূলেই থাকছেন শুভেন্দু। এমনকী, সূত্রের খবর, বৈঠক চলাকালীন সৌগত রায়ের ফোন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথাও বলেন শুভেন্দু।
কিন্তু, ১২-ঘণ্টাতেই ছন্দপতন। মঙ্গলবার রাতের সুর কাটল বুধবার দুপুরেই। এদিন শুভেন্দু-তৃণমূল দ্বন্দ্ব মেটাতে ও নন্দীগ্রামের দাপুটে নেতার মানভঞ্জনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সৌগত রায়কে এসএমএস-এর মাধ্যমে শুভেন্দু নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন।
সূত্রের খবর, সৌগত রায়কে একটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় শুভেন্দু লিখেছেন--
শুভেন্দু যে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের প্রতি অসন্তুষ্ট, তার ইঙ্গিত মিলেছিল গত ৩০ অক্টোবর! নন্দীগ্রামের সভায় তাঁকে বলতে শোনা যায়, আমি প্যারাসুটেও নামিনি, লিফটেও চড়িনি, ধাপে ধাপে এই জায়গায়।
এরপর তৃণমূলের ব্যানার-পতাকা ছাড়াই একের পর এক অরাজনৈতিক সভা। জেলায় জেলায় জনসংযোগ। পাহাড় থেকে জঙ্গলমহল, দাদার অনুগামীদের নামে পোস্টার!
আরও পড়ুন: Sougata Roy Exclusive On Suvendu-Abhishek Meet: "হ্যাঁ দিদি ঠিক আছে...", মমতার সঙ্গে ফোনে কথা শেষে বলেন শুভেন্দু, দাবি সৌগতর
এরপর গত ১০ নভেম্বর, নন্দীগ্রাম দিবসে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি এবং তৃণমূলের ব্যানারে জোড়া কর্মসূচি ঘিরে সংঘাত চরমে ওঠে। এরমধ্যেই গত শুক্রবার ৩ দফতরের মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেন শুভেন্দু।
সবকিছুই অন্য রকম বার্তা দিচ্ছিল! রাজ্য রাজনীতিতে শুভেন্দুকে ঘিরে বইতে শুরু করেছিল জল্পনার স্রোত।
শুরু থেকেই বরফ গলানোর বিষয়ে আশাবাদী ছিলেন সাংসদ সৌগত রায়। অবশেষে মঙ্গলবার রাতে চমক। যাঁদের কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে শুভেন্দুর অসন্তোষ ছিল বলে সূত্রের দাবি, সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শুভেন্দু।
হাজির ছিলেন তৃণমূলের দুই বর্ষীয়ান সাংসদ ছিলেন সৌগত রায় ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু-অভিষেক-প্রশান্ত কিশোরের মুখোমুখি বৈঠকে আশাবাদী ছিলেন তৃণমূল সাংসদ তথা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারীও। বলেছিলেন, সব মিটে গেলেই ভাল।
যে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সাম্প্রতিককালে একাধিকবার শুভেন্দুকে আক্রমণ করেছেন, মঙ্গলবার রাতের নাটকীয় বৈঠকের পর তাঁরও সুর নরম হয়ে যায়। বলেন, আমি স্বাগত জানাচ্ছি।
কিন্তু, বুধবার দুপুরে সব সুর-তাল কেটে যায়। শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর তাঁকে কার্যত দু’হাত খুলে দলে আসার আহ্বান জানিয়ে রেখেছে বিজেপি।