নয়াদিল্লি ও কলকাতা: স্বেচ্ছায় নয়, বাধ্য হয়েই সিঙ্গুর ছাড়তে হয়েছে। পরিকল্পনা করেই সেখানে নৈরাজ্য তৈরি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার সিঙ্গুর মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টে এমনই দাবি করলেন টাটাদের আইনজীবী। যা বিধানসভা ভোটের শেষ লগ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গুর-অস্বস্তি বাড়াতে পারে বলে মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের।


২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে, মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই সিঙ্গুরের জমি ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, বাস্তবে পাঁচ বছর পর রাজ্যবাসী যখন আরেকটা বিধানসভা ভোটের লাইনে, তখনও সেই সিঙ্গুর মামলা সুপ্রিম কোর্টে। এই প্রেক্ষাপটে ক’দিন আগে ভোটপ্রচারে সিঙ্গুরে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের একবার জমি ফেরানোর আশ্বাস দেন।

এরপর সিঙ্গুরে ভোট হয়েছে। তার ক’দিন যেতে না যেতেই সুপ্রিম কোর্টে শুনানির জন্য উঠল সিঙ্গুর মামলা। আর সেখানে সিঙ্গুর ছাড়তে বাধ্য হওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দিকেই আঙুল তুললেন টাটাদের আইনজীবীরা। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি গোপাল গৌড়া এবং বিচারপতি অরুণ মিশ্রর বেঞ্চে তাঁরা বলেন,
২০০৮-এ দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে অবরুদ্ধ করে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। ২০১১ সালে মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে জমি দখল করে রাজ্য সরকার।
পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছেন, আমরা সিঙ্গুর ছেড়ে যাইনি। যেতে বাধ্য করা হয়েছে। সিঙ্গুরে পরিকাঠামো তৈরিতেই কয়েক হাজার কোটি বিনিয়োগ করা হয়েছে।
টাটা মোটরসের এই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরা।

পাশাপাশি বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে কি টাটারা ফের বুঝিয়ে দিল যে, সিঙ্গুরে প্রকল্প গড়তে তাঁরা এখনও আগ্রহী? এর আগেও সুপ্রিম কোর্টে দাঁড়িয়ে টাটাদের আইনজীবী একবার বলেন, আমরা জমি ছেড়ে দিইনি৷ আমরা প্রকল্প সম্প্রসারণ করছি৷ প্রথম পর্যায়ে গুজরাতে প্রকল্প শুরু হয়েছে৷ পরের পর্যায়ে প্রকল্পের সম্প্রসারণ হবে৷ সিঙ্গুরে প্রকল্প গড়তে আমরা অত্যন্ত আগ্রহী৷
মঙ্গলবারের মন্তব্যেও কি সেই আগ্রহেরই প্রতিফলন রয়েছে? প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। আজ সুপ্রিম কোর্টে ফের এই মামলার শুনানি।