জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং: পাহাড়ে সরকারি অফিসে বনধ সেভাবে দানা বাধছে না! প্রথম দিনই ৯০ শতাংশের উপর হাজিরা। মুখে স্বীকার না করলেও, অস্বস্তিতে মোর্চা। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের দিকে সমর্থন টানতে, সমতলে শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।
মঙ্গলবার, চা বাগান সংলগ্ন জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার জেলা এবং ইসলামপুর ও মেখলিগঞ্জ মহকুমায় সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে জয়েন্ট ফোরাম। ধর্মঘটী ২৪টি চা শ্রমিক সংগঠনের জয়েন্ট ফোরামে রয়েছে, মোর্চার চা শ্রমিক সংগঠন ‘দার্জিলিং ডুয়ার্স প্ল্যানটেশন লেবার্স ইউনিয়নও।
সোমবার তাৎপর্যপূর্ণভাবে সাধারণ ধর্মঘটে নিজেদের সরাসরি সমর্থনের কথা জানিয়েছে মোর্চা। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, জয়েন্ট ফোরাম কাল কে সাধারণ ধমঘট ডেকেছে। ন্যূনতম মজুরির দাবিতে। মোর্চা সমর্থন করছে। দার্জিলিং, তরাই, ডুয়ার্স চা বাগান এলাকায় ধর্মঘট।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, চা বাগান আন্দোলনের সঙ্গে জড়ানো মোর্চার একটি সুপরিকল্পিত কৌশল। কারণ, উত্তরবঙ্গের লক্ষ লক্ষ চা শ্রমিকদের মধ্যে একটা বড় অংশই পাহাড়ের বাসিন্দা। তাই, চা বাগান ধর্মঘটে দলীয় শ্রমিক সংগঠনকে সামিল করা এবং জয়েন্ট ফোরামের সাধারণ ধর্মধটে সমর্থন জানানো, সেই কৌশলেরই অঙ্গ বলে মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের। কারণ, এটা চা শ্রমিকদের রুটি-রুজির প্রশ্ন।
এখন তাঁদের দৈনিক মজুরি ১৩২ টাকা ৫০ পয়সা। এটা বাড়িয়ে ৩৫০ টাকা করার দাবি তুলেছে চা শ্রমিক সংগঠনগুলি। অভিযোগ, ২০১৪ সালে ৩৭ টাকা ৫০ পয়সা মজুরি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হলেও, এখনও তা কার্যকর হয়নি। দু’দিনের এই চা বাগান ধর্মঘটে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন সামিল হয়নি। আইএনটিটিইউসি নেতা আনসার আলি বলেন, হরতাল মানি না, সমর্থনও করিনা। হরতাল করে লাভ হয়না। মুখ্যমন্ত্রীও চান না ধর্মঘট হোক। কিন্তু দাবিতে সমর্থন করছি। কথা বললে সব মিটে যাবে। যদিও, ধর্মঘটে একযোগে সমর্থন জানিয়েছে সিপিএম, কংগ্রেস ও আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন।
উত্তরবঙ্গে চা বাগানগুলির ১০ থেকে ১২ শতাংশ পাহাড়ে। বাকি সব সমতলে। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের আন্দোলনের দিকে সমর্থন টানতে, মোর্চার সাধারণ ধর্মঘটকে সমর্থন করার কৌশল কি আদৌও কাজে আসবে? প্রশ্ন রাজনৈতিকম হলে।