বীরভূম: প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহের তালিকায় ছিলেন। এক সপ্তাহ ধরে জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল। কিন্তু সাফল্য পাচ্ছিল না পুলিশ! শেষমেষ শনিবার রাতে ভেঙে পড়লেন মা! দুই মেয়ের খুনের ঘটনায়, ভাইয়ের পর বীরভূমের মহম্মদবাজারের অপর্ণা সাধুকেও গ্রেফতার করল পুলিশ!
পুলিশ সূত্রে খবর, ভাই যে, তাঁর দুই মেয়েকে খুন করেছে, তা প্রথম থেকেই জানতেন মা অপর্ণা। কিন্তু, গোটা বিষয়টি চেপে গিয়েছিলেন তিনি। তদন্তকারীদের দাবি, এই সব কারণে প্রথম দিকে খুনির খোঁজ পেতে অসুবিধা হচ্ছিল।
ভাই গ্রেফতার হলেও, মচকাননি অপর্ণা! পুলিশ সূত্রে দাবি, নানারকম বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে তদন্তকে ভুল পথে পরিচালিত করৈর চেষ্টা করছিলেন তিনি। অপর্ণার উদ্দেশ্যই ছিল, যে কোনও মূল্যে ভাইকে আড়াল করা।
তদন্তকারীদের অনুমান, গোপন সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং সম্পত্তির লোভ -- এই দুই কারণেই মহম্মদবাজারে দুই বোনকে খুন করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ভিন জাতির এক ছেলের সঙ্গে বড় ভাগ্মী সুস্মিতার সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন মামা রামপ্রসাদ। বচসা চলাকালীন পাল্টা মায়ের পুরুষসঙ্গীদের প্রসঙ্গ তোলে সুস্মিতা।
তখনই কন্যাসম দুই ভাগ্নীকে চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রামপ্রসাদ সাহা। খুনের নেপথ্যে তাঁর অন্য একটি উদ্দেশ্য ছিল বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।
তদন্তকারীদের অনুমান, ভাইয়ের সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বে বাপের বাড়িতে অপর্ণার কয়েক লক্ষ টাকার সম্পত্তি রয়েছে। দিদির ভাগের ওই সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল রামপ্রসাদের। নজর ছিল অপর্ণার শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তির ওপরেও। কিন্তু তা করতে গেলে বাধা হতে পারত ভাগ্মি সুস্মিতা ও পুস্পিতা।
কারণ, জোড়া খুনে ধৃত অপর্ণার স্বামীও কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে থাকেন। মাঝেমধ্যে বাড়ি আসেন তিনি। দুই সন্তানকে নিয়ে একাই বাড়িতে থাকতেন অপর্ণা। কিন্তু যে মেয়েরা এত কাছের ছিল, তাদের খুনের পরেও কী করে অবিচল ছিলেন মা? ভাই খুন করেছে জেনেও, কেন তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি?
তদন্তকারীদের আরও অনুমান, একাধিক পুরুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা মেয়েরা জেনে যাওয়ায় তা মানতে পারেননি অপর্ণা। সম্ভবত সেই কারণেই, দুই মেয়ে খুন হয়েছে জেনেও চুপ ছিলেন মা! উল্টে মরিয়া চেষ্টা করেছেন খুনি ভাইকে বাঁচানোর!
যদিও শেষরক্ষা হয়নি। সুস্মিতা ও পুষ্পিতা খুনেক ঘটনায় মামার পর ধরা পড়লেন তাদের মাও! আট দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর!
গোটা ঘটনা নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি অপর্ণা। ধৃত মাকে রবিবার দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে সিউড়ি আদালত।
ধৃত মামাও এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। যদিও সূত্রের খবর, এক পাটি হাওয়াই চটি আর রক্তমাখা বঁটি ছাড়া আর কোনও প্রমাণ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
তদন্তকারীদের অনুমান, ভাইকে বাঁচাতে অপর্ণা বেশ কিছু প্রমাণ লোপাট করেছেন। কিন্তু এখনও কেন ডাকা হল না ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের? উত্তর নেই বীরভূম পুলিশের কাছে।
Exit Poll 2024
(Source: Poll of Polls)
দুই মেয়ের খুনে মামার পর গ্রেফতার মা
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
26 Jun 2016 02:16 PM (IST)
NEXT
PREV
রাজ্য (states) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -