কলকাতা: জিএসটি-র প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘটে বস্ত্রশিল্পীরা। পাশে থাকার আশ্বাস রাজ্য সরকারের। শুক্রবার বড়বাজারে ব্যবসা বনধ।
মাঝরাতে সংসদে বিশেষ অনুষ্ঠান। ‘জিএসটি-র জন্মক্ষণ’কে ইতিহাসের পাতায় তুলতে চেষ্টার কসুর করছে না মোদী সরকার। কিন্তু সেই জিএসটি-র প্রতিবাদেই ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘটকে বাড়িয়ে ৯৬ ঘণ্টা করল ‘চেম্বার অফ টেক্সটাইল ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’! একই পথে হেঁটে শুক্রবার ব্যবসা বনধের ডাক দিলেন কলকাতার বড়বাজারের ব্যবসায়ীরা!
বস্ত্রশিল্পের ওপর যেন কোনও কর না বসে। মোদীর গুজরাতের পাশাপাশি বেশির ভাগ রাজ্যই এই দাবি করেছিল। কিন্তু বস্ত্রশিল্পে ৫ শতাংশ কর বসিয়েছে জিএসটি পরিষদ।
এরপরেই আন্দোলনে নেমেছেন রাজ্যের বস্ত্র ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার তাঁদের সংগঠনের প্রতিনিধিরা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। সরকারও তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, বস্ত্রশিল্পে জিএসটি কার্যকরী হলে, কয়েক লক্ষ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বেন। বন্ধ হয়ে যাবে বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িত অসংখ্য ছোট ও মাঝারি সংস্থা।
প্রথমে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ধর্মঘট ডেকেছিল এই সংগঠন। কিন্তু ধর্মঘটের মেয়াদ শুক্রবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। চেম্বার অফ টেক্সটাইল ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির তরফে বলা হয়, এতদিন কাপড়ের ওপর কোনও কর ছিল না। ফলে দাম বাড়বে। গোটা বিষয়ে ধোঁয়াশা। কর দিতে আমরা রাজি। কিন্তু পুরো ব্যবস্থার সরলীকরণ চাই। ব্যবসায়ীরা গোটা বিষয়ে অন্ধকারে।
ধর্মঘটের জেরে দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারে বন্ধ ছিল কাপড় ও পোশাকের দোকান। একই ছবি ছিল বড়বাজারেও। যমুনালাল বাজার স্ট্রিট সংলগ্ন এলাকায় কোনও পাইকারি পোশাকের দোকান খোলেনি। নিজেদের দাবি জানাতে মিছিলও করেন ব্যবসায়ীরা।
অন্যদিকে, জিএসটির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে, শুক্রবার ব্যবসা বনধের ডাক দিয়েছে বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতি। এই ধমর্ঘটে ফেডারেশন অফ ট্রেডার্স অরগাইনেজনও সামিল হচ্ছে। সমিতির ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট চন্দন চক্রবর্তী বলেন, জিএসটি চালু হোক। কিন্তু তার আগে ট্রেনিং দেওয়া হোক। তারা কী করে হিসেব করবে। মুদির দোকানে কী করে বুঝবে।
রাজ্য সরকারেরও দাবি, দেশের ৮০ ভাগ ব্যবসায়ীই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে জড়িত। জিএসটি-র ফলে তাঁরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন।
যদিও, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির দাবি, জিএসটি চালু হলে ছোট ব্যবসায়ীদের কোনও ক্ষতি হবে না। তিনি বলেন, ছোট কথা বলে কিন্তু মনে অন্য উদ্দেশ্য থাকে। ২০ লক্ষ টাকা টার্নওভার পর্যন্ত কোনও কিছু দিতে হবে না। ৭৫ পর্যন্ত ২ পার্সেন্ট দিতে হবে। তার ওপরে বেশি দিতে হবে।
কিন্তু, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর আশ্বাস সত্ত্বেও ব্যবসায়ীদের একাংশ কিন্তু এখনও বেজায় ক্ষুব্ধ।