গাইঘাটা: ভোটের আগে আত্মসমালোচনার সুর জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যানের গলায়। দলের বিধায়কদের কাজের মধ্যে কোনও সমন্বয় নেই। গোবরডাঙায় মতুয়াদের আলোচনা সভায় এভাবেই ক্ষোভ উগরে দিলেন নির্মল ঘোষ। যদিও সমন্বয়ের অভাব নেই বলে দাবি করেছেন গাইঘাটার তৃণমূল বিধায়ক। নির্বাচন, তাই লোক দেখানো আত্মসমালোচনা করছে শাসকদল। কটাক্ষ করেছে বিজেপি।

শুক্রবারই রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে আরেক তৃণমূল বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়াকে বহিষ্কার করেছে দল। ভোটের আগে বেসুরো শাসকদলের নেতানেত্রীই! যা ঘিরে ভোটের আগে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে এবার আত্মসমালোচনার সুর উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূলের চেয়ারম্যানের গলায়।

উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল চেয়ারম্যান নির্মল ঘোষ বলেন, ‘দলের বিধায়কদের কাজের মধ্যে কোনও সমন্বয় নেই। তার জেরেই গত লোকসভা নির্বাচনে গাইঘাটা বিধানসভায় দলের ভরাডুবি হয়েছে। বিধানসভায় পুলিনবাবু পিছিয়ে পড়ছেন, ভরাডুবি হয়েছে।’

শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙায় মতুয়াদের এক আলোচনা সভায় যোগ দিয়েছিলেন জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান। সেখানেই দলের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের অভিযোগ তোলেন তিনি।

রাজ্যের প্রায় ৪৮টি বিধানসভা আসনে জয়-পরাজয়ের বড় ফ্যাক্টর মতুয়া ভোট। গত লোকসভা ভোটে বনগাঁ এবং রানাঘাট, দু’টি কেন্দ্রই তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ২৯,৫৭২ ভোটে গাইঘাটা আসনটি দখলে রাখে তৃণমূল। গত লোকসভা ভোটের বিধানসভাভিত্তিক ফলে গাইঘাটায় প্রায় ৩৬ হাজার ভোটে এগিয়ে বিজেপি।

এই প্রেক্ষাপটে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়া ভোট নিজেদের ঝুলিতে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যে বনগাঁয় গিয়ে সভাও করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার চলতি মাসের শেষে বনগাঁয় যাওয়ার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহেরও।

এই অবস্থায় জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যানের মুখে সমন্বয়ের অভাবের অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তি আরও বেড়েছে শাসকদলের। যদিও তা মানতে নারাজ স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক পুলিন বিহারি রায়। তাঁর দাবি, ‘আমরা সমঝোতা করে কাজ করেছি। সমন্বয়ের অভাব নেই।’

এনিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। গোবরডাঙ্গার বিজেপি মণ্ডল সভাপতি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘সামনে নির্বাচন। তাই লোকদেখানো আত্মসমালোচনা করছে শাসকদল। এরপরেও আসন্ন বিধানসভা ভোটে গাইঘাটা বিধানসভায় বিজেপি আরও ভাল ফল করবে।’

তৃণমূলে সমন্বয় আছে কি নেই, বা তার কতটা প্রভাব ভোটে পড়বে, তা অবশ্য জানা যাবে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেই।