সমীরণ পাল, জয়ন্ত পাল ও অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা: ভোটের পর বিজেপি ছেড়ে পুরানো দল তৃণমূলে ফিরে আসতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন অনেক নেতাই। বিজেপি ছেড়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূলে ফিরেছেন মুকুল রায়। তিনি সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে বিধায়ক পদে নির্বাচিত হয়েছেন মুকুল। তৃণমূলের দাবি, আরও কয়েকজন বিজেপি বিধায়ক তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকরের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।  এ ব্যাপারে দলের কোর্টে বল ঠেললেন মুকুল রায়। দলবদলের জল্পনার মধ্যেই বিক্ষুব্ধদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। যা নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
শনিবার শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, আমি বিরোধী দলনেতা, আমি দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করব।তৃণমূলে মুকুল রায়ের ঘরওয়াপসির পর শনিবারই দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকরের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে, দল বদলের পর মুকুল রায় বিধায়ক পদেই থাকবেন?নাকি, ইস্তফা দেবেন?না, দীনেশ ত্রিবেদী বা মানস ভুঁইয়ার আসনে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠাবে তৃণমূল?
এ নিয়ে জল্পনার মাঝেই রবিবার মুখ খুললেন মুকুল রায়। তবে বিধায়ক পদ ছাড়ার ব্যাপারে বল ঠেলে দিলেন দলের কোর্টে। বললেন, এ ব্যাপারে দল সিদ্ধান্ত নেবে। 
বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পর থেকেই, ভোটের আগে দলবদল করে বিজেপিতে যাওয়া নেতারা একে একে আবার তৃণমূলের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছেন। শুক্রবার তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন মুকুল রায়। পাশাপাশি শাসকদলে ফিরে আসার আর্জি জানিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন আরও অনেকে।
অন্যদিকে দলে ভাঙন রুখতে সক্রিয় হয়েছে বিজেপিও। দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকরের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। 
পাল্টা শাসকদল মনে করিয়ে দিয়েছে, তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে জিতে সাংসদ হয়েও, বিজেপির মঞ্চে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী।
দু’পক্ষের এই চাপানউতোরের মাঝেই এদিন ফেসবুকে কড়া বার্তা দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।  দিলীপ ঘোষ লিখেছেন, দল ছাড়াটা এখন অনেকের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বিজেপি সেই লোকেদের উপর নির্ভর করে, যাঁরা রক্ত দিয়ে, ঘাম ঝরিয়ে দলকে দাঁড় করিয়েছে।
পাশাপাশি বিক্ষুব্ধদের উদ্দেশে বিজেপির রাজ্য সভাপতির বার্তা, বিজেপিতে থাকতে হলে ত্যাগ-তপস্যা করতে হবে। যাঁরা শুধু ক্ষমতা ভোগ করতে চান, তাঁরা বিজেপিতে থাকতে পারবেন না। আমরাই রাখব না।
যদিও এ নিয়ে পাল্টা সুর চড়িয়েছে তৃণমূল।  শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, এটা নির্বাচনের আগে মনে ছিল না, যখন উনি দলত্যাগীদের নিচ্ছিলেন, তখন মনে ছিল না? আজকে হঠাৎ মনে পড়েছে। এখন ওদের দল ওটা কিভাবে সামলাবেন, দল কি করে বাংলায় টেকাবেন? ওরাই ঠিক করুক।
সব মিলিয়ে ভোটপরবর্তী দলবদল ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে যে ঝড় উঠেছে, তা এখনই থামার কোনও লক্ষ্মণ নেই।