কলকাতা: কয়লাকাণ্ডে ইডির সমন খারিজের দাবিতে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী মঙ্গলবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করেছে ইডি। তার আগে সমন খারিজের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হলেন তৃণমূল সাংসদ।


এ ব্যাপারে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এদিন বলেছেন, আমাদের নেতাদেরও তো গুজরাত থেকে মুম্বইতে ডেকেছিল। তাঁরা সোনার মতো চকচকে হয়ে বেরিয়ে এসেছেন। সিবিআই যেখানে নিরাপদ সেখানে ডাকবে। এখানে ডাকলে তো ওরা ঘেরাও করবে, ঢিল মারবে, মুখ্যমন্ত্রী ধর্না দেবেন।


কয়লাকাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে ইডি-র তলব প্রসঙ্গে এভাবেই কটাক্ষ করলেন দিলীপ ঘোষ।


উল্লেখ্য, কয়লাকাণ্ডের তদন্তে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লিতে তলব করেছে ইডি। তাদের সেই সমনের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে  শুক্রবার দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়।


কয়লাকাণ্ডে, গত ১ সেপ্টেম্বর রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ৬ সেপ্টেম্বর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-কে দিল্লিতে তলব করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ১ সেপ্টেম্বর দিল্লি যাননি অভিষেক-জায়া রুজিরা। ইডি সূত্রের খবর, অতিমারির ঝুঁকির কারণ উল্লেখ করে তিনি ইডিকে চিঠি দেন। কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, সেটা তাঁর পক্ষে সুবিধাজনক বলেও চিঠিতে জানান রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়।


৬ সেপ্টেম্বর, দিল্লিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অফিসে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি।পরে বাইরে বেরিয়ে ইডির তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। বলেছিলেন, সবাই জানে ক্যামেরার সামনে যারা হাত পেতে টাকা নেয়, তাদের বিরুদ্ধে তদন্তকারী সংস্থা ব্যবস্থা নেয় না। কারণ তারা একটা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়লেই হ্যারাস করতে হবে। এই কেস কলকাতার। আমাকে দিল্লিতে ডাকা হয়েছে।


৮ সেপ্টেম্বর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফের তলব করে ইডি। যদিও তিনি যাননি। এরপর ১১ সেপ্টেম্বর ফের তৃণমূল সাংসদকে সমন পাঠায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তাতে বলা হয়েছে,আগামী মঙ্গলবার তদন্তকারীদের সামনে উপস্থিত হতে হবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।এই প্রেক্ষাপটেই কয়লাকাণ্ডে ইডির সমন খারিজের দাবিতে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করলেন তিনি।


৬ সেপ্টেম্বর ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের পর  অভিষেক বলেছিলেন, সব করব, মাথা নত করব না। শিরদাঁড়া বিক্রি করব না। ২০২৪-এ বিজেপিকে হারাবই।


অভিষেকের মন্তব্যের জবাবে দিলীপ বলেছিলেন, ৯ ঘণ্টা যদি ইডি জেরা করে, তখন লোকে অনেকেই আবল-তাবোল বকে। সবে তো শুরু হয়েছে। যে নেতারা ভুবনেশ্বর গিয়েছিলেন তাঁদের চেহারাই পাল্টে গিয়েছিল।  এতদিন ভেবেছিল পুলিশ-সিআইডি দিয়ে চালিয়ে দেবেন। চমকে রেখে দেবেন, যা ইচ্ছা করবেন। ওনাদের রাজত্বে কয়লা, বালি, পাথর লুঠ হয়েছে। গরু পাচার হয়েছে।