কলকাতা: করোনা আবহে এবারও ভার্চুয়াল মাধ্যমেই আজ  ২১ জুলাইয়ে শহিদ দিবস পালন করবে তৃণমূল। তবে এবারই প্রথম সর্বভারতীয় স্তরে বার্তা দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রীর বক্তৃতা শোনানো হবে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত-সহ একাধিক রাজ্যে। প্রতিবার এই দিনটিকে শহিদ দিবস পালনের পাশাপাশি দলের আগামীদিনের নীতি নির্ধারণ ঘোষণার দিন হিসেবে পালন করে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে এবারের ২১ শে জুলাই অন্যান্যবারের থেকে কিছুটা আলাদা। কারণ, করোনা আবহে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর এটাই প্রথম শহিদ দিবস পালন। এবারই প্রথম জাতীয় স্তরে দিনটি পালন করছে রাজ্যের শাসকদল। দেশের বিভিন্ন স্থানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ সম্প্রচারের ব্যবস্থা করেছে তৃণমূল। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পর্যুদস্ত করে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল। আর এই সাফল্যই জাতীয় স্তরে নরেন্দ্র মোদির বিরোধিতার ক্ষেত্রে সামনের সারিতে এনে দিয়েছে তৃণমূলকে। 



তৃণমূলের কাছে ২১ জুলাইয়ের তাৎপর্য



প্রতি বছরই কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলায় ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ করে থাকে তৃণমূল। কিন্তু করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে গতবারও তৃণমূলের এই সমাবেশ ভার্চুয়ালই হয়েছিল।  ১৯৯৩-র ২১ জুলাই পুলিশের গুলিতে ১৩ জন কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন রাজ্য যুব কংগ্রেস নেত্রী। যুব কংগ্রেসের ডাকে এক প্রতিবাদ অভিযানে পুলিশের গুলিতে ওই কংগ্রেস কর্মীদের মৃত্যু হয়। এই ঘটনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট বলেই মনে করা হয়ে থাকে।  এই ঘটনার বছর দুয়েক আগে ১৯৯১-এ  বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন ঘটেছিল বামফ্রন্ট সরকারের। তখন রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল ছিল কংগ্রেস। বিরোধী দল কংগ্রেস সিপিএমের বিরুদ্ধে ভোটে রিগিংয়ের অভিযোগ করা হয়েছিল। স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবিতে কংগ্রেস ভোটারদের সচিত্র পরিচয় পত্রের দাবি করেছিল। এই সচিত্র পরিচয় পত্রের দাবিতে মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন যুব কংগ্রেস।  এই অভিযানের সময়ই পুলিশের গুলিতে ১৩ জন কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। 


জনমানসে এই ঘটনার ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ওই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন উদীয়মান নেত্রী। এই ঘটনার পর বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রধান মুখ হয়ে ওঠেন তিনি। চার বছর পর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১-তে বামফ্রন্ট সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় এসেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। ক্ষমতায় আসার পর ওই ঘটনার তদন্তে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করেছিল তৃণমূল সরকার।১৯৯৩-এর ২১ জুলাইয়ের ঘটনার পর থেকে প্রতি বছর এই দিনটি শহিদ দিবস হিসেবে পালন করে তৃণমূল।