মালদা: ছাত্রভোটের ঢাকে কাঠি পড়তেই ফের রণক্ষেত্রে শিক্ষাঙ্গন। তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে জখম হলেন দুপক্ষ মিলিয়ে ১২ জন। চারজনকে নিয়ে যেতে হল হাসপাতালে। এ ধরনের আচরণকে সমর্থন নয়, বার্তা শিক্ষামন্ত্রীর। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আশ্বাস উপাচার্যের। ঘটনাস্থল মালদা।
ঘটনার সূত্রপাত, সোমবার দুপুরে। প্রথমে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য তারিকুল শেখের উপর হামলা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর দাবি, দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ করাতেই হামলা চালাল। এরপর, হামলার পাল্টা হামলা।
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট সভাপতি আক্রাম আলির দাবি, হিরাগত এসে ইউনিয়ন দখলের চেষ্টা করছে। শুধু হামলা-পাল্টা হালমাই নয়, শ্লীলতাহানিরও অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে একেবারেই ভাল চোখে দেখছেন না শিক্ষামন্ত্রী। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, এ সব ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। মহাসচিব হিসেবে রিপোর্ট চেয়েছি দলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেমের কাছ থেকে। শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে ভিসির কাছে রিপোর্ট চাইব। কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপাল মিশ্রও।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ছাত্র ভোটের ঢাকে কাঠি পড়তেই রণক্ষেত্রে চেহারা নিল ক্যাম্পাস। ১৪ জানুয়ারি, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ মালদার সমস্ত কলেজে ভোট। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটের দিনক্ষণও দ্রুত ঘোষণা হবে।
এই পরিস্থিতিতে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতার রাশ কার হাতে থাকবে তা নিয়েই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এল। একদিকে, শাসক দলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের অনুগামী তৃণমূল যুব নেতা বিশ্বজিৎ‍ রায়, অন্যদিকে, প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর অনুগামী প্রসেনজিৎ‍ দাস, যিনি মালদা জেলার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি।
এখন রাজ্যের প্রায় নব্বই শতাংশ কলেজই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের হাতে। তার উপর, ছাত্র সংসদের ভোটে, মনোনয়ন জমা বা তোলা যে অনলাইনে হবে না, সেই মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছে সরকার। এই পরিস্থিতিতে, ছাত্র ভোট ঘিরে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে অশান্তি রোখা যাবে তো? এই প্রশ্নও উঠছে শিক্ষামহলে।