বীরভূম: কো এড স্কুল। কিন্তু, পরিবেশ এমনই যে ছাত্র-ছাত্রী একসঙ্গে ক্লাস করতে পারে না। সোম, বুধ, শুক্র ছাত্রদের ক্লাস। মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি ছাত্রীদের। এমন আজব রুটিন কখনও দেখেছেন কোনও কোএড স্কুলে? বীরভূমে খয়রাশোল ব্লকের এই স্কুলে এরকমই আজব ব্যবস্থা চালু হয়। তার কারণ শুনলেও অবাক হবেন! একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাসে ছাত্রীদের উত্যক্ত করার অভিযোগ উঠছিল ছাত্রদের বিরুদ্ধে। তা আটকাতে না পেরে ছাত্র ও ছাত্রীদের ক্লাস আলাদা করার মতো আজব সিদ্ধান্ত নেয় স্কুল! তবে এবিপি আনন্দের খবরের জেরে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। সোমবার থেকে ছেলে-মেয়েরা একসঙ্গেই ক্লাস করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।
এই স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ২৩৮। দ্বাদশ শ্রেণিতে ছাত্র-ছাত্রী মিলিয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ২২৮। অভিযোগ মূলত আসছে এই দুই ক্লাস থেকেই। এক ছাত্রীর অভিযোগ, ছাত্ররা মোবাইলে অশ্লীল ভিডিও এনে দেখায়।
শিক্ষকরা কার্যত স্বীকারই করে নিচ্ছেন যে, তাঁরা অবাধ্য ছাত্রদের সামলাতে পারেন না। ফলে কখনও কখনও পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে ক্লাসে পড়ানো পর্যন্ত যায় না।
তবে ক্লাস ভাগ করার সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক মাথাচাড়া দেয় বিভিন্ন মহলে। প্রশ্ন ওঠে, ছাত্রদের একাংশের বিরুদ্ধে অবাধ্যতার অভিযোগ উঠলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ছাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়া উচিত। তা না করে ক্লাস ভাগের সিদ্ধান্ত কেন? এতে তো পড়ুয়াদেরই ক্ষতি। ছ’দিনের বদলে ক্লাস তিনদিন ক্লাস করে তারা কীভাবে সিলেবাস শেষ করবে?
কিন্তু, ক্লাস ভাগ করে দেওয়ার এই সিদ্ধান্তে হাসি ফোটে স্কুলের ছাত্রীদের। কারণ, এখন তাহলে অন্তত আর অবাধ্য ছাত্রদের হাতে তাদের উত্যক্ত হতে হয় না! তারা অন্তত নিশ্চিন্তে পড়াশোনা করতে পারবে।
ছাত্রদের দাবি, তাদের একাংশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্কুল একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবার তৃণমূল পরিচালিত খয়রাশোল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। যদিও, এদিন স্কুলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। ১ জুলাই থেকে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদা ক্লাস করার নির্দেশিকা চালু হয়ে গিয়েছে।
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস জানান, কো এড স্কুলে এমন হলে, তা নিয়ম বিরুদ্ধ। এতে স্কুলের পঠনপাঠনের সময়সীমা কমে যাচ্ছে। বিষয়টা খতিয়ে দেখছি। ঘটনায় জেলা পরিদর্শকের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ঘটনা সত্যি হলে তদন্ত করবেন জেলা পরিদর্শক। জেলা স্কুল পরিদর্শক রেজাউল হকও বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ। তাঁর দাবি, এটা সরকারি নিয়ম বহির্ভূত কাজ। স্কুলে এরকম সিদ্ধান্ত নিতে গেলে সরকারের অনুমোদন নিতে হয়। এটা কী করে সম্ভব হল? খোঁজ খবর নিচ্ছি। এরপরেই স্কুলের সিদ্ধান্ত বদলে গেল।
এবিপি আনন্দের খবরের জের, বীরভূমের স্কুলে আলাদা ক্লাসের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
15 Jul 2017 05:51 PM (IST)
NEXT
PREV
রাজ্য (states) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -