হাওড়া: 'বাংলায় বিশ্বাসঘাতকদের কোনও ঠাঁই হবে না'। নাম না করে, এবার বিজেপি নেতা তথা ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে পোস্টার পড়ল তাঁরই এলাকায়। পাশাপাশি, পোস্টারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানিয়ে সেচ দফতরে তদন্ত কমিটি গড়ে বিশ্বাসঘাতকদের গ্রেফতারের দাবিও জানানো হয়েছে। 
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের দাবি, ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কুত্সা রটানোয় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দলীয় কর্মীদের।
২০১১ ও ২০১৬, পরপর দুই বিধানসভা নির্বাচনে ডোমজুড় থেকেই তৃণমূলের হয়ে জিতে বিধায়ক হন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সেচ ও বন দফতরের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। 
কিন্তু, ২০২১-এর ভোটের আগেই পথ বদলান রাজীব। যোগ দেন গেরুয়া শিবিরে। বিজেপির টিকিটে ডোমজুড় কেন্দ্র থেকেই ভোটে দাঁড়ান তিনি। কিন্তু, পরাজিত হন তৃণমূল প্রার্থীর কাছে। 
গতকালই বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন ঘটেছে মুকুল রায়ের। ইতিমধ্যেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো  দলবদলে যাওয়া কিছু বিজেপি নেতা বেসুরো গাইছেন। ফলে তাঁদেরও তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে জল্পনা বাড়ছে। 
কয়েকদিন আগে রাজীব ফেসবুকে লেখেন, সমালোচনা তো অনেক হল...মানুষের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভালভাবে নেবে না। 
এরপর রাজীব আরও লেখেন, আমাদের সকলের উচিত রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কোভিড ও ইয়াস এই দুই দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলার মানুষের পাশে থাকা। 
এবিপি আনন্দকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কুৎসা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ বাংলা ভালভাবে নেয়নি। উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রচারও মানুষ ভালভাবে গ্রহণ করেননি। প্রথম থেকে এর বিরোধিতা করলেও কেউ শোনেনি।
এই ঘটনায় রাজীবের বিরুদ্ধে  সবচেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া জানান, তাঁরই মতো তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া...অর্জুন সিং ও সৌমিত্র খাঁ। সৌমিত্র বলেন,যাদের মেরুদন্ড নেই, তারা চিন্তা ভাবনা করবে, তৃণমূলে গিয়ে কুকুরের মতো থাকতে। অর্জুন সিংহ কটাক্ষ হেনে বলেন, উনি ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে চান, তাই হয়তো ফের দল বদলের কথা ভাবছেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের হাওড়া (সদর) চেয়ারম্যান তথা  সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, দুরাত্মার ছলের অভাব হয় না । এখন মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে দলে মাথা ঢোকানোর চেষ্টা করছে। অনেক সময় শয়তান চার্চে গিয়েও ভাল ভাল কথা বলে। অভিনয়ে উৎপল দত্তকেও হার মানাচ্ছেন।
যদিও ফিরহাদ হাকিম রাজীবের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাজীব ভুল বুঝতে পারলে ভালো। অনেকে তো ভুল বুঝতে পারে না। 
ডোমজুড় কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের নামে এই পোস্টার দেওয়া নিয়ে বারবার ফোন করা সত্ত্বেও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এর আগে ডোমজুড়ের সলপে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশ্বাসঘাতক অ্যাখ্যা দিয়ে পোস্টার পড়ে।