কলকাতা: নিম্নচাপের হাত ধরে বাংলায় ঢুকে পড়েছে বর্ষা। তার জেরে আগামী ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের সর্বত্র বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস। উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা।
দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের মতো উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে ভারী বৃষ্টি থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। নিম্নচাপের দোসর অমাবস্যার কটাল। জোড়া ফলায় সমুদ্র উত্তাল। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা। সোমবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
ঢুকে যেতে পারে গঙ্গার জল। ভাসতে পারে কলকাতার নিচু এলাকা। গতকাল অমাবস্যার ভরা কটালে এমনই আশঙ্কা ছিল। তাই নেওয়া হয়েছিল আগাম প্রস্তুতি। কলকাতা থেকে দিঘা - কোথাও দেখা গেল না কটালের ভয়াবহতার ছবি। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল বাংলা।
ঘূর্ণিঝড় আর পূর্ণিমার কটালে কতটা ভয়াবহ হতে পারে, ২৬মে তা দেখেছে রাজ্য। তাই নিম্নচাপ আর অমাবস্যার কটাল নিয়েও দানা বেঁধেছিল আশঙ্কার মেঘ। কলকাতা থেকে জেলা-- সব জায়গায় নেওয়া হয় পরিস্থিতি মোকাবিলার জোরদার প্রস্তুতি।ভরা কটালের জলোচ্ছ্বাস থেকে কলকাতাকে বাঁচাতে শুক্রবার বেলা বাড়তেই বন্ধ করতে দেওয়া হয় সমস্ত লকগেট। জমা জল বের করার জন্য তৈরি রাখা হয় পাম্প।
ইয়াসের সময় কলকাতায় গঙ্গার জলস্তরের উচ্চতা ছিল ১৯ ফুট। এদিন কটালের জেরে তা ওঠে ১৭ ফুট। সেই সঙ্গে বেশি বৃষ্টি না হওয়ায় জল জমার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ফলে গতকাল দুপুর সাড়ে তিনটেয় খুলে দেওয়া হয় সমস্ত লকগেট।
কড়া সতর্কতা নেওয়া হয় ইয়াস বিপর্যস্ত দিঘাতেও। তবে সমুদ্র ছিল শান্তই।তাজপুরে সমুদ্র উত্তাল হলেও, ঢেউয়ের ধাক্কা সামলে নিয়েছে বাঁধানো পাড়। এরই মধ্যে সমুদ্রে নেমে পড়ায় তাজপুরে আটক করা হয় অতি উত্সাহী ৫ পর্যটককে।
ইয়াস আর কটালের জোড়া ধাক্কায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাজপুরের জলধা গ্রাম। ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে রাস্তা। ভেঙেছে বাঁধ।
কটালের আশঙ্কায় গতকাল সকালে বন্ধ করে দেওয়া হয় তাজপুরের বাঁধ ও রাস্তা সারাইয়ের কাজ।সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয় নিরাপদ আশ্রয়ে।সমুদ্র ফুঁসে না ওঠায়, দুপুরের পর স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।শুরু হয় রাস্তা-বাঁধের কাজ।
ইয়াস চলে গিয়েছে। কিন্তু রয়েছে গিয়েছে আতঙ্ক। জলোচ্ছ্বাস আছড়ে না পড়লেও সেই আতঙ্কই কাঁপিয়ে দিয়ে গেল কটালে।