সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: ছেলেকে বিয়ে দিয়েছিলেন। বৌমাকে নিয়ে ঘরে তুলেছিলেন। কিন্তু এরপর নিজেকেই সেই ঘরে ক্রমাগত ব্রাত্য হতে হতে হয় প্রতাপ মুখোপাধ্যায় ও অঞ্জনা মুখোপাধ্যায়কে। বৌমার হাতে নিপিড়ীত হয়েছেন দিনের পর দিন, ছেলে দেখেও কিছু বলেনি। মানসিক অত্যাচার থেকে মারধর কিছুই বাদ যায়নি বলে অভিযোগ। গত কয়েক মাস ধরে বাড়ির বাথরুম, দোতলার ঘর, সিঁড়িতে তালা মেরে রাখে ছেলে বৌমা। নীচের একটা ঘরে কার্যত গৃহ বন্দী হয়ে থাকেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা।


মন চায়নি ছেলের বিরুদ্ধে থানা পুলিশ করার। কিন্তু বাধ্য হয়ে পুলিশ প্রশাসনের দারস্থ হন। প্রশাসনের তরফে ছেলেকে ডেকে মীমাংসা করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ছেলে না মানায় এরপর বাধ্য হয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হন বৃদ্ধা। আদালতে রিট পিটিশান করেন গত ২১ জুন। ২৭ তারিখ হাইকোর্টের বিচারক রাজা সেখর মান্থা পুলিশকে নির্দেশ দেন ছেলে বৌকে বাড়ি থেকে বিতারিত করার। ওই বাড়িতে বৃদ্ধ বৃদ্ধা ছাড়া কারও অধিকার নেই। ছেলেকে বাড়িতে ঢুকতে গেলে বাবার অনুমতি নিতে হবে পুলিশকেও জানাতে হবে।


আদালতের নির্দেশে এরপরই সোমবার উত্তরপাড়া থানার পুলিশ ১৮/এ ভবানী সেন সরনীতে প্রতাপ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে যায়। ছেলে সুশান্ত ও বৌমা পম্পাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। তাঁদের জিনিসপত্রও বের করে দেওয়া হয়। বৃদ্ধ বৃদ্ধা বলেন, তাদের মন চায়নি ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করতে কিন্তু ২০১৩ সাল থেকে মানসিক শারীরিক অত্যাচারের শিকার হয়েছি তাতে এছাড়া আর উপায় ছিল না। ছেলে সুশান্ত বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে অশান্তি শুরু হয়। বাবা মা বলেছিল বিবাহ বিচ্ছদ করতে আমি তা করিনি বলে আজ এই ঘটনা। বাবা মা যে অত্যাচারের কথা বলছে তার বিপরীত ঘটনা ঘটেছে এই বাড়িতে। আমার ঘরের বিদ্যুৎ কেটে দেওয়া হয়েছে। একটা ঘরে অন্ধকারে বসবাস করেছি। একদিকে ভালই হল।’