দক্ষিণ ২৪ পরগনা: থমকে থাকা পাওয়ার গ্রিড প্রকল্প ঘিরে ফের উত্তপ্ত ভাঙড়!
৪ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভাঙড়ের জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি। সেই উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ এলাকায় বাইক মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা।
ঠিক ছিল, পাওয়ার গ্রিডের গেট থেকে বের হওয়া এই মিছিল যাবে নতুন হাট পর্যন্ত। কিন্তু মাঝপথেই অশান্তির শুরু। অভিযোগ, অনন্তপুর মোড়ের কাছে মিছিলের ওপর হামলা হয়। মুড়ি মুড়কির মতো পড়তে থাকে বোমা! চলে গুলিও! আগুন লাগানো হয়, বেশ কয়েকটি গাড়ি ও বাইকে!
বোমার স্প্লিন্টারে আহত হন বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী। আন্দোলনকারীদের দাবি, এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে তৃণমূল। আবারও আঙুল উঠেছে আরাবুল ইসলামের দিকে।
গণ্ডগোলের খবর ছড়িয়ে পড়তেই, মাছিভাঙা, বকডোবা, খামারআইট, শ্যামনগর, পোলেরহাট-সহ বিভিন্ন এলাকা উত্তপ্ত হতে শুরু করে। শুরু হয় অবরোধ। কোথাও রাস্তা কেটে দেওয়া হয়। তো কোথাও বেঞ্চ ফেলে, ইট ফেলে রাস্চা অবরোধ করা হয়। কিছুক্ষণ পর পুলিশ পৌঁছয় এলাকায়। শুরু হয় রাস্তা ফাঁকা করার কাজ।
তৃণমূল হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের পাল্টা দাবি, এলাকাকে অশান্ত করতে চেয়েছিল সশস্ত্র আন্দোলনকারীরা। প্রতিরোধ গড়েছে এলাকার মানুষ। রাজ্যের শাসক দলের দাবি, অশান্তির পিছনে মাওবাদীদের পাশাপাশি সিপিএম, কংগ্রেসেরও মদত রয়েছে।
ভাঙড়ের বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা রেজ্জাক মোলা বলেন, অনুমতি ছাড়া মিছিল হচ্ছিল। মিছিলে মজুত ছিল অস্ত্র, বোমা। তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম বলেন, আন্দোলনকারীদের খুনের ষড়যন্ত্র করে এলাকাকে অশান্ত করতে চেয়েছিল। ফেলে রাখা বোমা ফেটে গাড়িতে আগুন। এলাকার মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে। সিপিএম, কংগ্রেস, মাওবাদী সবাই এর সঙ্গে জড়িত আছে।
অভিযোগ উড়িয়ে ভাঙর ইস্যুতে পাল্টা তৃণমূলকে নিশানা করেছে সিপিএম-কংগ্রেস। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তীর প্রশ্ন, পূর্বঘোষিত মিছিলে গুলি, বোমা নিয়ে আক্রমণের অধিকার কে দিয়েছে? এটা কি মগের মুলুক?
বিজেপি অবশ্য ভাঙড়ের অশান্তি নিয়ে কৌশলী অবস্থান নিয়েছে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, কমিউনিস্ট ও মাওবাদীরা আছে। বহিরাগতরা আছে। তবে জোর করে আন্দোলন দমাতে গেলে সিপিএমের মতো ক্ষমতা থেকে চলে যেতে হবে। বিজেপির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।
গত বছরের জানুয়ারিতেও, পাওয়ার গ্রিডকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়েছিল ভাঙড়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল দু’জনের। এবার কারও মৃত্যু না হলেও, ফিরল সেই হিংসার ছবি!