কলকাতা: রাজ্য-রাজভবন ক্রমাগত সংঘাতের আবহেই শুক্রবার থেকে শুরু হতে চলেছে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন।


আর তার আগে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, প্রথা মাফিক কি রাজ্য সরকারের লিখে দেওয়া ভাষণই পাঠ করবেন রাজ্যপাল? না কি ভাষণের বিশেষ কোনও অংশ বাদ দেবেন তিনি?


এরইমধ্যে শুধু রাজভবন-নবান্ন কিংবা রাজ্যপাল-তৃণমূলই নয়, রাজ্যপালের সঙ্গে বিধানসভার অধ্যক্ষেরও কার্যত সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। 


কিছুদিন আগেই অধ্যক্ষদের ভার্চুয়াল বৈঠকে, লোকসভার অধ্যক্ষের কাছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিধানসভার কাজকর্মে হস্তক্ষেপের অভিযোগ জানান অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, অধ্যক্ষদের সম্মেলন ছিল। সেখানেই (রাজ্যপালের বিষয়ে) বলেছি। সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ ইস্যুতে আমি এটা নিয়ে নির্দেশ দিই। রাজ্যপাল হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেন। স্পিকারকে সেটাই বলেছি।



তারই প্রেক্ষাপটে অধ্যক্ষকে পাল্টা এই চিঠি দেন রাজ্যপাল। চিঠিতে তিনি বলেন, রাজ্যপাল হিসেবে আমি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার কাজে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছি বলে লোকসভার স্পিকারের কাছে আপনি যে অভিযোগ করেছেন, তাতে আমি যন্ত্রণার থেকে বেশি দুঃখই পেয়েছি। এর থেকে বেশি দুর্ভাগ্যজনক এবং সত্য থেকে বহু দূরের বিষয়, আর কিছু হতে পারে না।


এরপর, চিঠির দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে রাজ্যপাল অভিযোগ করে বলেছেন, আপনার (বিধানসভার অধ্যক্ষ) আচরণের ফলে একাধিকবার রাজ্যপালের দফতরের মর্যাদাহানি হয়েছে। সে বিষয়ের প্রতি আমি আপনার (বিধানসভার অধ্যক্ষ) দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। এমনকি, আগেভাগে জানিয়ে বিধানসভায় গিয়েও ভিতরে ঢুকতে পারিনি। কারণ মূল ফটক বন্ধ ছিল। সেদিন হতবাক হয়ে গেছিলাম।


শুক্রবার বাজেট অধিবেশনের সূচনায় ভাষণ দেবেন রাজ্যপাল। কিন্তু বিধানসভা সূত্রের খবর, কোভিডের কারণে এবার রাজ্যপালের বাজেট বক্তৃতা সম্প্রচার করা যাবে না। 


আর এই আবহেই বিধানসভার অধ্যক্ষকে লেখা চিঠিতে এর আগেরবারের প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যপাল লিখেছেন,  আমাকে অপমান করা হয়েছে। বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণ দেখানো হয়নি। সংবিধানের ১৭৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী, রাজ্যপালের ভাষণের সরাসরি সম্প্রচার ব্ল্যাক আউট করাটা জরুরি অবস্থার সামিল ছিল। যদিও, সেবার মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য দেখানো হয়েছিল।


সব মিলিয়ে সংঘাতের আবহে শুক্রবার সবার নজর এখন বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের দিকে।