সুমন ঘড়াই ও মনোজ্ঞা লহিয়াল, কলকাতা : রাজ্যজুড়ে বেলাগাম পেট্রোপণ্যের দাম। পেট্রোল-ডিজেলের বাড়তে থাকা দামের জেরে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ করার পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠিতে পেট্রোল-ডিজেল থেকে কেন্দ্রকে কম রাজস্ব আদায় করার কথাও জানিয়েছেন। তথ্য তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, মে মাসে ৮ বার ও জুন মাসে ৬ বার পেট্রোপণ্যের দাম বেড়েছে। যার জেরে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে বলেও চিঠিতে লিখেছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, গত ৬ বছরে পেট্রোপণ্যের ওপর লাগামছাড়া সেসের জেরে দুর্ভোগ বেড়েছে সাধারণ মানুষের, সেই সেস কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করার কথাও চিঠিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।


পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে পেট্রোপণ্যের মূল্যে ছাড় দেওয়ার প্রসঙ্গের উল্লেখ করা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিতে। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ক্রমাগত সেস বাড়ানো হলেও ট্যাক্স থেকে প্রাপ্ত অর্থে যে ৪২ শতাংশ ভাগ রাজ্যের পাওনা তা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গকে। পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে বাড়তে থাকা মূল্যবৃদ্ধিরও উল্লেখ রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিতে। যার জন্য পেট্রোপণ্যের বাড়তে থাকা কারণকেই দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। চিঠিতে উল্লেখ, পেট্রোপণ্যের বর্ধিত মূল্যের জেরেই মে মাসে দেশের হোলসাম প্রাইস ইনডেক্স ১২.৯৪ শতাংশ ছুঁয়েছে। কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স ৬.৩ শতাংশ ও ভোজ্য তেলের মূল্য ৩০.৮ শতাংশ, ডিমের দাম ১৫.২ শতাংশ, ফলের দাম ১২ শতাংশ বেড়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিতে বলা হয়েছে, অতিমারির মাঝেই স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রীর দাম বেড়েছে ৮.৪৪ শতাংশ।




২০১৪-১৫ সালে পেট্রোপণ্যের দাম থেকে যে ট্যাক্স কেন্দ্র আদায় করত তা থেকে গত ছয়বছরে সেন্ট্রাল এক্সাইজ বাড়িয়ে কেন্দ্রের আয় ৩৭০ শতাংশ বেড়েছে বলেই চিঠিতে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় ইতিমধ্যে পেট্রোলের দাম যে ইতিমধ্যে ১০০-র গণ্ডি পার করে গিয়েছে এবং কলকাতায় যা একশোর ছোঁয়ার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সেই বিষয়টি উল্লেখ করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অভাবনীয় তকমা দিয়ে চিঠিতে দ্রুত কেন্দ্র ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদক্ষেপ দাবিও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।