অর্ণব মুখোপাধ্যায়, হাওড়া:
ডোমজুড়ে আর নয় অন্যায় কর্মসূচিতে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রা চলাকালীন উত্তেজনা। সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন বিধায়ককে দেখানো হল কালো পতাকা। পাল্টা জয় শ্রীরাম স্লোগান দেন বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা।
বিক্ষোভে গুরুত্ব না দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন পদযাত্রা শুরুর আগে তৃণমূলত্যাগী প্রাক্তন বিধায়কের নাম না করে বিশ্বাসঘাতক অ্যাখ্যা দিয়ে একাধিক জায়গায় কালো রঙের পোস্টার লাগানো হয়।
বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
এর আগে, গতকাল যাদবপুরে বিজেপির একটি সভায় বক্তব্য রাখেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেন, "তৃণমূলে থাকলেই সবাই সাদা, আর অন্য দলে গেলই তাঁকে মাখাও কাদা। তৃণমূলে থাকলেই সাধু,আর অন্য দলে থাকলেই অসাধু। ওই দলে কোনও স্বাধীনতা ছিল না।"
বন সহায়ক পদে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ঘিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাগযুদ্ধ শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে অভিযোগ ওঠে, ফরেস্ট আইন মেনে বনসহায়ক পদে নিয়োগ করা হয়নি!
এমনকি যাঁরা এতদিন ধরে স্বেচ্ছায় জঙ্গল সুরক্ষার কাজ করে আসছেন, তাঁদের সুযোগ না দিয়ে অযোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে।
মমতা-মন্ত্রিসভায় বনদফতরের দায়িত্ব ছিল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে! ভোটের মুখে সম্প্রতি তিনিই দিল্লিতে বিজেপিতে যোগ দেন! আর এরপরই বুধবার আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে নাম না করে দুর্নীতির অভিযোগে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূলনেত্রী দাবি করেন, একটা ছেলে চলে গেছে বিজেপিতে। এখন বড় বড় কথা বলছে। বন সহায়কের পদে নিয়োগ নিয়ে কিছু কারসাজি করেছে। আমাকে অনেকে খবর দিয়েছে। আমি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত চলছে। চুরি করে বিজেপিতে চলে গেছে। বিজেপি ওয়াশিং মেশিন। সব কালো গিয়ে ঢুকছে আর সাদা হয়ে যাচ্ছে।
পাল্টা জবাব দিয়েছেন রাজীব। বলেন, কে কে সুপারিশ করেছে। কোন জেলার নেতা করেছে, কালীঘীট থেকে কে সুপারিশ করেছে, সব নথি আছে। আলিপুরদুয়ারে আছেন জেলা সভাপতিও সুপারিশ করেছে। দলের লোক ঢোকানোর জন্য সুপারিশ করেছে। আমি নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে চেয়েছিলাম। তৃণমূলের কোন নেতা-মন্ত্রী সুপারিশ করেছেন সব আমার কাছে আছে।
শুধু সদ্য প্রাক্তন দলনেত্রীকে পাল্টা আক্রমণই নয়, সেইসঙ্গে তাঁর উদ্দেশে চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়! বলেন, কোনও তদন্ত করতে হবে না। আমি একটা কথা বলছি, পারলে করুন, তাহলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে, আপনি প্যানেল বাতিল করে দিন। তাহলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বিজেপিতে যোগদানকারী সদ্য প্রাক্তন তৃণমূল নেতাদের আক্রমণ করছেন ও নিজের দলকে স্বচ্ছ বলে দাবি করছেন, তখন তাঁর উদ্দেশে একযোগে একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে বিজেপি ও বিজেপিতে যোগদানকারী নেতারা।
রাজীব বলেন, বন সহায়কের প্যানেল বেরোনোর পরও আমি তৃণমূলে ছিলাম। তখন কেন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি? কেন আমাকে তাড়িয়ে দেননি? কেন আমি যখন বিজেপিতে যাচ্ছিলাম, তখন কয়েকজনকে আমার কাছে পাঠিয়েছিলেন, বলেছিলেন ওকে ছাড়া যাবে না। সেই সব রেকর্ড আমার কাছে আছে।