সুজিত মণ্ডল, নদিয়া : শান্তিপুর বিধানসভা আসনে জয়ী হয়েছেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। বাংলায় বিজেপির ভরাডুবির পর কী করবেন তিনি? সাতটি বিধানসভা নিয়ে গঠিত রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ থাকবেন? নাকি রাজ্যে বিরোধী রাজনীতির স্বার্থে সাংসদ পদ ছেড়ে শান্তিপুরের বিধায়ক হবেন? সেই জল্পনাই পাক খাচ্ছে এখন।


উইলিয়ম শেকসপিয়রের হ্যামলেট-এর অ্যাক্ট থ্রি, সিন ওয়ানের বিখ্যাত লাইন 'টু বি অর নট টু বি, দ্যাট ইজ দ্য কোয়েশ্চেন।' সোজা বাংলায়, থাকব কি থাকব না, প্রশ্ন হল সেটাই। শেকসপিয়রের হ্যামলেট নাটকে ডেনমার্কের রাজপুত্রের দ্বন্দ্ব এখন যেন বিজেপি নেতা জগন্নাথ সরকারের সামনে। রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে এবার বিধানসভা ভোটে শান্তিপুর আসনে প্রার্থী করে বিজেপি। রাজ্যে সবুজ সুনামির মধ্যেও শান্তিপুরে গেরুয়া নিশান উড়াতে সফল হয়েছেন তিনি। দোসরা মে-র পর থেকেই শুরু হয় জল্পনা।


কী করবেন জগন্নাথ সরকার? সাতটি বিধানসভা এলাকার অভিভাবক হয়ে সাংসদ পদে থাকবেন? নাকি সাংসদ পদ ছেড়ে শান্তিপুরের বিধায়ক হবেন?
শুক্রবার বিজেপির নব নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা বিধায়ক হিসেবে শপথ নিয়েছেন। বিধানসভায় সেই অনুষ্ঠানে শপথ নিতে হাজির হননি শান্তিপুরের জয়ী বিজেপি প্রার্থী তথা রানাঘাটের সাংসদ। আর তাতেই আরও জোরাল হয়েছে জল্পনা। যদিও জগন্নাথ সরকারের দাবি, এবিষয়ে দলের সিদ্ধান্তই শিরোধার্য। 


জগন্নাথ সরকার বলেছেন, 'আমার নিজস্ব পরিকল্পনা নেই। দল যা বলবে তাই করব। বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোটা মূল কর্তব্য বলে মনে হচ্ছে। কারণ যেভাবে পশ্চিম বাংলায় শাসন চলছে, সেই বিধানসভায় বিধায়ক হিসেবে শপথ নেওয়া লজ্জাজনক বলে মনে হয়। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে শপথ নেওয়ার সময় কোথায় ? আগে অন্যায় অত্যাচার বন্ধ হোক'।


শান্তিপুরের জয়ী বিজেপি প্রার্থীর এই মন্তব্যে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল। নদিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেটর দীপক বসু বলেছেন, 'জগন্নাথ সরকার ঠিক কথা বলছেন না। উনার এমপি পদে অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। ইচ্ছা ছিল বিজেপি ক্ষমতায় এলে এমএলএ হয়ে মন্ত্রী হবেন। সেই ইচ্ছা আর পূরণ হওয়ার নয়। এই জন্য উনি বাহানা করছেন। রাজ্য সরকারকে যা খুশি বলছেন আর মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন'।


রাজ্যে বিজেপির বিপর্যয়ের পর জগন্নাথ সরকার কী করেন এখন সেটাই দেখার।