উত্তর ২৪ পরগনা: কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৮ জন সহকারী সুপারের মধ্যে ৫ জনই করোনা আক্রান্ত। সকলের একসঙ্গে রিপোর্ট পজিটিভ আসায় পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতাল সূত্রে খবর, করোনা আক্রান্ত চিকিত্সকরা সকলেই ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নিয়েছিলেন।


গতকালই সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে ভয়াবহ অবস্থার ছবি দেখা যায়। করোনাকালে নেই বেড, জরুরি বিভাগেই ছটফট করতে করতে মৃত্যু করোনা রোগীর। জরুরি বিভাগের সামনেই মেঝেয় পড়ে ছটফট করছিলেন ওই রোগী। হাসপাতাল সুপার বলেন, একই চ্যানেল দিয়ে একজনের পর একজন রোগী অক্সিজেন নিচ্ছেন। ১০ বেডের অক্সিজেন পার্লারের একটিও খালি নেই।


রোগীকে ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে না খাবার। মিলছে না সামান্য জলও। এমনকি মৃত্যুর খবরও পৌঁছচ্ছে না বাড়িতে। কোভিড আক্রান্তদের প্রতি এরকমই বহু অভিযোগ উঠল সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। প্রচুর রোগীর চাপ। সাফাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।


হাসপাতালের বেডে শুয়ে আবদার করেছিলেন করোনা আক্রান্ত মা। কিন্তু তাঁর শেষ ইচ্ছাটাও রাখতে পারলেন না মেয়ে। কারণ, চা পৌঁছনোর আগেই করোনা কাড়ল প্রাণ। আর এই পরিণতির জন্য, সাগর দত্ত কোভিড হাসপাতালের অব্যবস্থার দিকেই আঙুল তুলল মৃতের পরিবার।


আড়িয়াদহের বাসিন্দা ৫৬ বছরের প্রতিমা দাসকে শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। রোগীর মেয়ের অভিযোগ, ন্যূনতম পরিষেবাটুকুও পাননি তাঁর মা। এমনকি তাঁর শারীরিক অবস্থা যে অবণতি হয়েছিল, সেকথাও জানানো হয়নি। মৃতের মেয়ে গৌরী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি জানতে গেছিলাম মা কেমন আছে, বলল আপনি স্টিস্টারের ড্রেস পরে আছেন, তাই বলছি, হয়ত আপনার মা মারা গেছে, কিন্তু ডাক্তার বলেননি তাই বলতে পারছি না। একবারও জানালো না যে আইসিইউ-র প্রয়োজন আছে, হাসপাতালে নেই, কিন্তু আমরা তো ব্যবস্থা করতে পারতাম।


হাসপাতালে নিয়ে আসার পর রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া হয় নিমতার বাসিন্দা ৬২ বছরের পুষ্প পাত্রকে। কিন্তু বেড না থাকায় ভর্তি করা যায়নি মহিলাকে। সাগরদত্ত কোভিড হাসপাতালের বিরুদ্ধে একই রকম অব্যবস্থার অভিযোগ তুলেছেন রাধারানি সাহার পরিজনরাও। এসব অভিযোগ ওঠার পর, সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন,  ভয়ঙ্কর রোগীর চাপ। তার মাঝেও আমরা চেষ্টা করছি পরিষেবা দেওয়ার।