রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: ভূমিপুত্র প্রার্থী চাই! গত কয়েকদিন ধরে কুসুমপুর সহ পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর বিধানসভা এলাকায় অলিগলিতে চোখ রাখলেই দেখা মিলছে এমন পোস্টারের। যার নীচে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীক। এখনও ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি।


পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম আসন থেকে শুধু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছেন, ভবানীপুরেও লড়বেন। বাকি অন্য কোনও আসনে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি শাসক দল। এই অবস্থায় মন্তেশ্বরে ভূমিপুত্র প্রার্থী চেয়ে তৃণমূলের নামে এ ধরনের পোস্টারে এলাকায় শাসকদলের অন্দরেই জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে।


কিন্তু কেন এমন পোস্টার? ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মন্তেশ্বর আসন থেকে জয়লাভ করেন তৃণমূল প্রার্থী সজল পাঁজা। তিনি মন্তেশ্বরেরই বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু দু’বছর বাদে হঠাৎ তাঁর মৃত্যু হয়। ২০১৮ সালের উপনির্বাচনে এই আসন থেকে জয়ী হন সজল পাঁজার ছেলে তৃণমূল প্রার্থী সৈকত পাঁজা। কিন্তু সম্প্রতি তিনি বিজেপিতে যোগদান করেছেন। আর তার পর থেকেই মন্তেশ্বরে তৃণমূলের প্রার্থীপদ নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। প্রার্থীপদ নিয়ে জল্পনা আরও বেড়েছে সম্প্রতি এই আসন থেকে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাওয়ায়।




আদতে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের তৃণমূল বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিধানসভা ভিত্তিক ফলের নিরিখেও মঙ্গলকোটে প্রায় ৩০ হাজার ভোটে এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু গত কয়েকদিনে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মঙ্গলকোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর বিবাদ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। আর তারপরেই মন্তেশ্বর আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন সিদ্দিকুল্লা। তিনি বলেন, মঙ্গলকোটে দাঁড়াচ্ছি না। মন্তেশ্বরে দাঁড়ানোর জন্য প্রস্তাব দিয়েছি।


তাহলে কি সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে মন্তেশ্বরে প্রার্থী হওয়া আটকাতেই এমন পোস্টার পড়ল?  মন্তেশ্বরের বিধায়ক ও বিজেপি নেতা সৈকত পাঁজা বলেন, এখানে তৃণমূলের অনেক গোষ্ঠীকোন্দল রয়েছে, তাঁদেরই কেউ করে থাকতে পারেন।


যদিও তৃণমূল নেতা ও মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কথায়, তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। দলের মধ্যে অশান্তি লাগানোর জন্য এসব করা হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাকে প্রার্থী করবেন সেই প্রার্থী হবে।


২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের বিধানসভা ভিত্তিক ফলের নিরিখে মন্তেশ্বর আসন থেকে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূলই।