কলকাতা: "মাদার টেরিজা, ভগিনী নিবেদিতা বিদেশ থেকে এসেছিলেন, তাঁরা আপন হয়ে গেলেন আর গুজরাত থেকে এলে বহিরাগত।" নিমতলায় চক্র থেকে এভাবেই তৃণমূলের 'বহিরাগত'-তত্ত্বকে আক্রমণ করলেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, "বাইরে থেকে লোক এলেই বলছে বহিরাগত। রবীন্দ্রনাথ যে "জন গন মন" লিখেছেন তাতে সারা দেশের নাম আছে।"
দিলীপ ঘোষ বলেন, রবীন্দ্রনাথ শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত লিখেছেন। রবীন্দ্রনাথ ভারত ছাড়াও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত লিখেছেন এছাড়া তিনি যে গান লিখেছেন তা শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত। (আসলে শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীতের সুর রবীন্দ্রনাথ অনুপ্রাণিত, শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীতের গীতিকার রবীন্দ্রনাথ নন)।
বিজেপি রাজ্য সভাপতির প্রশ্ন, আজকে বাংলার যে উন্নতি হয়েছে তাতে অবাঙালিদের কোনো ভূমিকা নেই? তিনি বলেন, কলকাতা কখন তৈরি হয়েছিল তখন অবাঙালিরা ব্যবসা করত। কিন্তু রাজ্যের লোকটা শ্রমিকের কাজ করতে। দিলীপের তোপ, এখানকার অর্থনীতির জন্য তারা বলিদান করেছে তাদের বহিরাগত বলা হচ্ছে?
বহিরাগত-তত্ত্বের জন্য তৃণমূলকে আক্রমণ করেন দিলীপ। তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী। বলেন, দিদিমনির মাথা খারাপ হয়ে গেছে তাই সবাইকে বহিরাগত বলছে। পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ এর সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ৪২ টা আসন পেলে প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না তাই বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করছেন। তাই বাংলাকে অশান্ত করার হচ্ছে হিংসা করা হচ্ছে। খুব খারাপ হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রেস কনফারেন্স সম্পর্কে দিলীপ বলেন, এই যে (মুখ্যমন্ত্রী) বলছেন রাজনৈতিক খুনোখুনি কমেছে, অপরাধ কমেছে। যদিও এর কোনও তথ্য নেই। উনি কেন ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো তথ্য পাঠাচ্ছেন না? রাজ্যের আইন শৃংখলার পরিপ্রেক্ষিতে যে তথ্য তুলে ধরেছেন সে সম্পর্কে বলেন, খুনের রাজনীতি চলছে পছন্দের মানুষ না হলে খুন করা হচ্ছে।
অমিত শাহর বক্তব্যের বিরোধিতা করে গতকাল মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ১০০ দিনের কাজ সহ বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পে এই রাজ্য সেরা। এই নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে খণ্ডন করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, কী আসলে হয়েছে মাননীয় অমিত শাহ বলে গিয়েছেন। এইসব কাজে কাটমানি আছে বলে বারবার টাকা চাওয়া হয়। বলা হয় এত বড় দুর্নীতি সারা ভারতে কোথাও হয় না। দিলীপের দাবি, লুঠ হচ্ছে বলেই ১০০ দিনের কাজে আগ্রহ বেশি।
দলবদল নিয়েও এদিন তৃণমূলের দিকে তোপ দাগেন দিলীপ। বলেন, সরকার থাকতে থাকতে মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়করা পালিয়ে যাচ্ছে আর দোষ দিচ্ছে আমাদের। কোনও ভদ্রলোক টিএমসি তে থাকতে পারছেন না। সবাই আসছেন বিজেপিতে।
তিনি মনে করিয়ে দেন, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর সিপিএমকে ভয় দেখিয়ে ফোন দিয়ে ভয় দেখিয়ে সমস্ত পঞ্চায়েত দখল করেছেন। এখন কেমন লাগছে বুঝতে পারছেন?