কলকাতা :  বিজেপিতে যোগদানের পর তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর ক্রমশ ঝাঁঝালো হচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীর। এদিন টিটাগড় থেকে মিছিল করে খড়দার সভায় শুভেন্দু বলেছে, এখন তো সবে কুঁড়ি ফুটেছে। রামনবমী বাসন্তী পুজো আসতে দিন। আমার বাড়িতেও পদ্ম ফুটবে।
শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর, কাঁথিতে তৃণমূলের সভায় অনুপস্থিত ছিলেন তাঁর বাবা ও দুই ভাই। এবার তাঁরাও কি বিজেপির দিকে পা বাড়াতে চলেছেন? মঙ্গলবার খড়দার সভা থেকে সেই জল্পনা উস্কে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী নিজেই। পাশাপাশি তৃণমূলের দিকেও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, আমার পরিবার বড় পরিবার। আমি তোমার বাড়িতেও ঢুকব। যেমন সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল, মোদিজি বলেছিলেন ঘুষকে মারেঙ্গে। তেমনই হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটেও আমরা পদ্ম ফোটাব। ওরা প্রধানমন্ত্রীকে তুই তোকারি করে, নাড্ডাকে বলে গাড্ডা। আপনাদের বহিরাগত বলছে, বললে আঞ্চলিক দল করলি না কেন? আরে নেমেছি তো ২জনকে হারাব বলে। এখানে কাটমানি সিন্ডিকেট, বুয়া-ভাতিজাকে উপড়ে ফেলতে হবে।
পাল্টা হুঙ্কার দিয়েছে তৃণমূলও। দলের সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, শুভেন্দুর নীচতা ও ঔদ্ধত্য দিনদিন সীমা ছাড়াচ্ছে। ওই ঔদ্ধত্য বেশিদিন থাকবে না।
শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যে তাঁর পরিবারের সদস্যদের দলবদলের জল্পনা যখন তুঙ্গে, তখনই কাঁথি পুরসভার প্রশাসকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে শুভেন্দুর ছোট ভাই সৌম্যেন্দু অধিকারীকে।
সৌম্যেন্দুর অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে, ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন শুভেন্দুর আরেক ভাই তথা তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। এই ইস্যুতে বেসুরো তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। ‘কাঁথি পুরসভার প্রশাসক অপসারণ দুর্ভাগ্যজনক’,রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ তৃণমূল সাংসদের। ‘কাল থেকে বসবো না পুরসভায়,যা হচ্ছে, ভাল হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না’, সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুভেন্দুর ভাইয়ের।‘দলনেত্রীকে শ্রদ্ধা করি’, প্রতিক্রিয়া দিব্যেন্দু অধিকারীর।‘ভাইকে অপসারণ, নিন্দনীয় সিদ্ধান্ত’, প্রতিবাদী দিব্যেন্দু।
তৃণমূল সূত্রে খবর, শুভেন্দু অধিকারীর দলত্যাগের পর সৌম্যেন্দু অধিকারীকে নিয়ে সন্দেহের জায়গা তৈরি হয়েছে। তার জেরেই এই অপসারণ।
পাশাপাশি ভাইপো ইস্যুতেও এদিন খড়দার সভা থেকে ফের সুর চড়িয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেছেন, ‘ভাইপো বলব না তো কী বলব বাবুসোনা!’
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই ভাইপো ইস্যুতে লাগাতার সরব শুভেন্দু অধিকারী। এনিয়ে তাঁকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করেছে তৃণমূলও। বলেছিলেন, মেরুদণ্ড নেই শুভেন্দুর। ভাইপোর নাম নিতে পারল না।


বছরের শুরুতেই ফের বঙ্গ সফরে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। তার আগে শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যে ফের তুঙ্গে তৃণমূলে ভাঙনের জল্পনা।