আবির দত্ত ও ঝত্বিক মণ্ডল, কলকাতা: স্কুলের পাশাপাশি, ১৬ নভেম্বর থেকে খুলছে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ও। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে খুশি পড়ুয়ারা। ইতিমধ্যেই, কলেজে কলেজে শুরু হয়েছে প্রস্তুতিও। উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক থেকে রাজ্যের স্কুল কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজোর পর থেকে ঊর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণ। এই প্রেক্ষাপটে সংশয় তৈরি হয়েছিল স্কুল খোলা নিয়ে। পরিস্থিতি এরকম থাকলে আদৌ কি স্কুল খোলা সম্ভব হবে? আশঙ্কায় ছিলেন পড়ুয়া থেকে অভিভাবকরা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় সমস্যাও বাড়ছিল।


বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র আকাশ দে জানান, কলেজ কী, তা বুঝে ওঠার আগেই বন্ধ হয়ে যায়। কলেজ খোলার সিদ্ধান্তে খুশি তৃতীয় বর্ষের এই ছাত্রও। তিনি বলেন, "খুব ভাল সিদ্ধান্ত, কিন্তু কতদিন খোলা থাকবে, তা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে।" আশুতোষ কলেজের ছাত্র অম্লান চক্রবর্তীর কথায়, কলেজ খুললে আরও ভালো করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারবেন। ক্লাসের অনুভূতি পাচ্ছিলাম না।এবার পাব।"  কাশীশ্বরী কলেজের ছাত্রী স্বস্তিকা রায়চৌধুরী প্রথম বর্ষের এই ছাত্রীর কাছে, করোনার সৌজন্যে কলেজ কী সেটাই এখনও অজানা। 


অগাস্টে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, পুজোর পর এক দিন অন্তর স্কুল-কলেজ খোলা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে। এবার সেই দিকেই আরও একধাপ এগোল রাজ্য। পুজোর পর রাজ্যে স্কুল খোলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের নির্দেশ, কালীপুজোর মধ্যে ক্লাস উপযোগী করে তুলতে হবে স্কুলগুলিকে। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা স্কুল ভবনগুলি সারাইয়ে জন্য ১০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। ৬ হাজার ৪৬৮টি স্কুল মেরামতির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। 


প্রসঙ্গত, পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় দু’হাজার। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মাত্র শুরু হয়েছে কলেজ খোলার প্রস্তুতি। বাগবাজার উইমেন্স কলেজের কর্মী অজয়কুমার দে বলেন, "অনেক দিন পর কলেজ খুলছে, পেস্ট কন্ট্রোলও করা হচ্ছে।" যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। সরকারের এই স্কুল-কলেজ খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন চিকিৎসকরাও। 


চিকিৎসক দীপেন্দ্র সরকার বলেন, "সিদ্ধান্ত সঠিক, স্কুল খুলতেই হত...সেরো পজিটিভিটি রেট বলছে, শিশুরা সংক্রমিত আগেই হয়েছে, ফলে স্কুল না খোলার কোনও কারণ নেই। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।" চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, "অত্যন্ত আশার খবর, যে স্কুল খুলছে। তবে, মাথায় রাখতে হবে, স্কুল খোলার পর সংক্রমণ বাড়লে, গেল গেল রব তুললে হবে না। আবার যেন স্কুলের দরজা বন্ধ না হয়, তা দেখতে হবে।"