শিলিগুড়ি: ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে শূন্য হয়ে গিয়েছিল রাজ্যের শাসকদলের প্রাপ্তির ভাঁড়ার। ৮ আসনের মধ্যে একটিতেও জিততে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। সেই হার মেনে নিয়ে ভোটমুখী বঙ্গে উত্তরবঙ্গবাসীর কাছে পুষিয়ে দেওয়ার আবেদন রাখলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।


শিলিগুড়ির সভামঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে গোহারা হেরেছি, তাতে আমার দুঃখ নেই, আমি কাজ করেছি, এবার পুষিয়ে দেবেন তো!’ বছর দুই আগে ভোটের খাতা শূন্য থাকলেও উত্তরবঙ্গবাসীর জন্য রাজ্য সরকার যথেষ্ট কাজ করেছে বলেই দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।

উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরতে গিয়ে তিনি জানান, ‘৩ লক্ষ চা শ্রমিকদের পাকা বাড়ি দেওয়া হবে। আমরা শুধু ঘোষণা করেই বসে থাকি না, কাজ করি।’ মুখ্যমন্ত্রী জোড়েন, ‘মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাব স্টেশনের উদ্বোধন হল। বালুরঘাট, হিল ইউনিভার্সিটি, কার্শিয়ঙে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। পাহাড়ে এডুকেশনাল হাব হচ্ছে।‘

এদিন শিলিগুড়ি থেকে ভার্চুয়ালি সেতুর উদ্বোধন করেন মমতা। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে তাঁর দলের সেতুবন্ধনের প্রচেষ্টা বাড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জয়ী ও কামতেশ্বরী সেতু উত্তরবঙ্গের মানুষকে উৎসর্গ করলাম।‘

সোমবার সংসদে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করার মাঝে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, ‘৬৭৫ কিমি সড়ক পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হবে। কলকাতা-শিলিগুড়ির রাস্তা সংস্কারও এর মধ্যে আছে। পশ্চিমবঙ্গের জন্য সড়ক তৈরিতে ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ।' পাশাপাশি রাজ্যে রেল পরিকাঠামো নিয়েও পরিকল্পনা করা হয়েছে। সীতারমণ জানান, রেলের জন্য জাতীয় রেল প্ল্যান তৈরি হয়েছে। খড়গপুর থেকে বিজয়ওয়াড়া ফ্রেট করিডর তৈরি হবে।

কেন্দ্রের বাজেটে উত্তরবঙ্গে রাস্তার উন্নয়নে বরাদ্দ প্রসঙ্গে খোঁচা দিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘৩২০০ কোটি টাকা নর্থ-সাউথ করিডরের কাজ চলছে। তোমরা কী করবে, আমরা করছি। ইসলামপুরে জট ছিল কেটেছে। রানাঘাটে জট রয়েছে, তোমরা মেটাচ্ছ না। নতুন করে আবার শিলিগুড়িতে কি করবে ? বাংলা কি হ্যাংলা?’

উত্তরবঙ্গে গত লোকসভা ভোটের ফলাফলের পর থেকে তৃণমূল কংগ্রেস যে হারানো জমি ফিরে পেতে বাড়তি নজর দিয়েছে, তাঁর প্রমাণ আগেও মিলেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ একাধিক তৃণমূল নেতা একাধিকবার উত্তরবঙ্গে গিয়ে সভা করেছেন।

কিন্তু এর মাঝে শাসকদলের একাধিক নেতা তৃণমূল ছেড়ে নাম লিখিয়েছেন বিজেপিতে। তাই বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে পদ্মের দাপটই বজায় থাকে নাকি ঘাসফুল ফের জমি ফিরে পায়, এখন সেদিকেই নজর রাজ্যের রাজনৈতিকমহলের।