বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: তাঁকে ‘বহিরাগত’ দাবি করে বিতর্কিত ফ্লেক্স পড়েছে তাঁরই নির্বাচনী কেন্দ্র নন্দীগ্রামে। এই নিয়ে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ তৃণমূলনেত্রী। কর্মিসভা থেকে তুললেন প্রশ্ন। বললেন, ‘কেউ কেউ বলছে আমি নাকি বাইরের লোক। ‘আমি বাংলার লোক, বাইরের লোক হলাম কী করে? গুজরাত থেকে যারা আসছে তারা বাংলার লোক?’
প্রার্থী তালিকা ঘোষিত হওয়ার পর প্রথমবার নন্দীগ্রামের মাটিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার আগেই নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর মুখের কথা এবার ফ্লেক্সে উঠে এল। তৃণমূলনেত্রীর নন্দীগ্রাম সফরের দিন এই ফ্লেক্স নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
সোমবার রাতে নন্দীগ্রাম দু'নম্বর ব্লকের রেয়াপাড়ার ক্ষুদিরাম মোড় এলাকায় এরকম ফ্লেক্স প্রথম নজরে আসে। ফ্লেক্সে লেখা হয়েছে, নন্দীগ্রাম মেদিনীপুরের ভূমিপুত্রকে চায়। কোনও বহিরাগতকে নয়। শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে ৷ এতদিন হলদিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার ছিলেন শুভেন্দু ৷ এবারই নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার হিসাবে নাম তুলেছেন তিনি।
অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুর কেন্দ্রের ভোটার! এই প্রেক্ষাপটে তৃণমূলনেত্রীর নন্দীগ্রামে পা রাখার দিনে এমন ফ্লেক্স কারা লাগাল, তা নিয়েই জল্পনা! কারণ, ফ্লেক্সের নিচে কারোর নাম লেখা নেই, অথচ স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের একাংশ দাবি করছে, তাঁরাই এই ফ্লেক্স দিয়েছেন। নন্দীগ্রামের বিজেপি কর্মী রতন দাস জানান, ‘‘আমরাই এই ফ্লেক্স লাগিয়েছি। ভূমিপুত্রকে প্রার্থী চাই। ভবানীপুরের কাউকে এখানে প্রার্থী চাই না। উনি কেন ওখান থেকে এখানে এসে প্রার্থী হবেন?’’
গেরুয়া শিবিরের এই স্বীকারোক্তি সামনে আসতেই বাগযুদ্ধে জড়িয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। নন্দীগ্রাম ১ নং ব্লকের তৃণমূল সভাপতি স্বদেশ দাস জানান, ‘‘এখানে বহিরাগত কে? শুভেন্দু তো কাঁথির বাসিন্দা। উনি নিজেই তো বহিরাগত। মুখ্যমন্ত্রী সারা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। নন্দীগ্রামেরও আপনজন। এই সব ফ্লেক্স লাগিয়ে ওরা বিভ্রান্তির চেষ্টা করছে ৷’’
তমলুক সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সহ সভাপতি প্রলয় পাল জানান, ‘‘শুভেন্দুবাবু নন্দীগ্রামের ভোটার। পূর্ব মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র। বহিরাগত কে তৃণমূলকে নতুন করে শেখাতে হবে ৷’’
এক এলাকার ভোটার, অন্য এলাকার প্রার্থী কিংবা এক রাজ্যের ভোটার, অন্য রাজ্যে থেকে প্রার্থী এরকম উদাহরণ ভারতীয় রাজনীতিতে ভুরি ভুরি আছে! যারমধ্যে অন্যতম হল, প্রধানমন্ত্রী মোদি।যিনি গুজরাতের আহমেদাবাদের ভোটার। পরপ দু’বার ভোটে জয়ী হয়েছেন উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে।