কলকাতা ও নয়াদিল্লি: বাংলায় ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস চলছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে এই অভিযোগ জানিয়ে এলেন বাংলার বিজেপি সাংসদরা। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে সিবিআই যাতে দ্রুত তদন্ত করে, সেই অনুরোধও করা হয়েছে বলে জানান বঙ্গ বিজেপির সাংসদরা। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, তদন্তের নামে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে জনপ্রতিনিধিদের হেনস্থা করছে বিজেপি।


কয়েকদিন আগেই দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।মমতার সেই আমন্ত্রণে সাড়াও দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।এই আবহেই প্রধানমন্ত্রীর দরবারে বঙ্গ বিজেপির সাংসদরা।বাংলায় ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে CBI ।সেই তদন্তের গতি বৃদ্ধির দাবি করলেন বাংলার বিজেপি সাংসদরা।  সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও দ্রুত রূপায়ণের আর্জি জানান বিজেপি সাংসদরা।  দলের এক নেতা বলেছেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীকে দ্রুত সিএএ রূপায়নের আর্জি জানিয়েছি, যাতে সমস্ত যোগ্য এর সুবিধা পান। আমরা এ ব্যাপারে আইন দ্রুত প্রণয়নের অনুরোধ করেছি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের আর্জি মনোযোগ সহকারে শুনেছেন এবং আমরা আমাদের অনুরোধ লিখিত আকারে জমা দিয়েছি।


রাজ্য বিজেপি সভাপতি ও সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে আমরা রাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের কথা জানালাম, এখনও সন্ত্রাস চলছে, অনুরোধ করলাম, যাতে কোর্টের নির্দেশে যে সিবিআই তদন্ত চলছে তা যেন যথাযথভাবে চলে, দ্রুত যেন কাজ করে সিবিআই।


পাল্টা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,  ইডি-সিবিআইয়ের কাছে কোনও মেটিরিয়াল নেই, এসব শুধু চাপ তৈরির জন্য, বেশি কিছু ওদের বলার তো নেই, তাই দিল্লি এসে নাচানাচি করছে। আমাদের দলের নেতা অভিষেককে কম হ্যারাস করেছে? আমাদের যাকে ধরছে কম হ্যারাস করছে? মলয় ঘটককে করছে। তার মানে মেটিরিয়ালস নেই। ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদেও যদি কোনও মেটিরিয়ালস পায়নি।


প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বাংলায় চাকরিতে দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গও তোলেন বঙ্গ বিজেপির সাংসদরা। সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, রাজ্যে SSC-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি ধরা পড়েছে, আমার বিশ্বাস আরও যে নিয়োগ হয়েছে সেগুলোতে তৃণমূল টাকা নিয়ে শিক্ষিত যোগ্যদের না দিয়ে, অযোগ্যদের চাকরি দিয়েছে, এই বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, সিবিআই অনুসন্ধানের বিষয়টিও যাতে তরাণ্বিত হয়, সেটার জন্য আবেদন জানিয়েছি।


রাজ্যে একাধিক মামলার তদন্ত করছে সিবিআই।তারমধ্যে অন্যতম সারদা মামলা চলছে সেই ২০১৪ সাল থেকে।২০১৭ সালে নারদ স্টিং মামলার তদন্তভারও নেয় সিবিআই।এই মামলারও এখন নিষ্পত্তি হয়নি।


এই প্রেক্ষাপটে বামেরা কটাক্ষের সুরে বলছে, আসলে ওপরে বিজেপি-তৃণমূলের মধ্যে কুস্তি চলে...আর তলায় দোস্তি! সে কারণেই CBI-এর কোনও কেলেঙ্কারির তদন্তই শেষ হয় না।


কবে শেষ হবে CBI তদন্ত?আদৌ কি দোষী রাঘববোয়ালরা কোনওদিন শাস্তি পাবে?চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া লক্ষাধিক সাধারণ মানুষ কি কোনওদিন তাদের টাকা ফেরত পাবে?না কি রাজনীতির যাঁতাকলে অপরাধীরা রেহাই পেয়ে যাবে?এই প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই কারোর কাছে।