কলকাতা: রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ নিয়ে সরব প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। সুর চড়িয়েছেন রাজ্যপাল। দিল্লি সফরের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া সুরে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। ভোট-পরবর্তী হিংসার অভিযোগ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ভোটের পর কোনও হিংসা হয়নি।কারও চোখে ন্যাবা হলে আমি কী করতে পারি?
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যা হয়েছিল, তা হয়েছে সেই সময়, যখন আইন-শৃঙ্খলার ভার ছিল নির্বাচন কমিশনের হাতে। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, সবটাই রাজনৈতিক হিংসা নয়। ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেও এমন ঘটনা ঘটেছে।কয়েকটি ঘটনা বিচারাধীন  যাই হোক, কোনও ধরনের হিংসাকে তিনি সমর্থন  করেন না বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।তিনি বলেছেন, ১-২টো বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে।ওরা শুধু সন্ত্রাস সন্ত্রাস বলে চেঁচিয়ে যাচ্ছে।রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ খারিজ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কারও যদি চোখে ন্যাবা হয় কী করতে পারি?
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যতই হিংসার কথা বলা হোক, এখানে কোনও হিংসা হয় না। কোনও ধরনের হিংসা হলে পুলিশকে পদক্ষেপ নিতে বলেছি। এ ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না।
রাজ্যে সরকারের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, রাজনৈতিক হিংসা নয়,এটা আসলে বিজেপির গিমিক ভায়োলেন্স।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেছেন, পরিমাণে কমলেও হিংসা অব্যাহত রয়েছে। আদালতের হস্তক্ষেপের পর কোনও কোনও ক্ষেত্রে পুলিশের সহযোগিতা মিললেও এখনও তাঁদের বহু কর্মীই ঘরছাড়া। 
ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছে একাধিক কেন্দ্রীয় দল। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন,যে কেউ যেকোনও রাজ্যে যেতে পারে। এর পাশাপাশি তিনি বলেছেন, তবে উত্তরপ্রদেশও যাওয়া উচিত ছিল, যেখানে দেহ নদীতে ভাসানো হচ্ছে। ২২ জন বিনা অক্সিজেনে মারা যায়। তিনি বলেছেন, বিজেপি সব এজেন্সিকে দিয়ে কাজ করায়। এটাই বিজেপির অভ্যেস, পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা।উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া  চিঠিতে রাজ্যপাল লিখেছিলেন,  ‘রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা, রক্তপাত, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত।  চলছে লাগাতার নারী নির্যাতন, বিরোধীদের সম্পত্তি ধ্বংস।অথচ গোটা ঘটনায় আপনি আশ্চর্যজনক ভাবে নীরব এবং নিষ্ক্রিয়। বারবার দৃষ্টি আকর্ষণের পরেও মন্ত্রিসভায় একদিনও আলোচনা করেননি। দুর্গতদের স্বার্থে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।’ 
পাল্টা রাজ্যপালের চিঠির কড়া জবাব দিয়েছিল রাজ্যের স্বরাষ্ট্রদফতর। ট্যুইট করে বলা  হয়েছিল, যাবতীয় নিয়ম-নীতি ভেঙে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠি জনসমক্ষে এনেছেন রাজ্যপাল। এরইসঙ্গে ট্যুইট করে গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। চিঠির বিষয়বস্তু প্রকৃত ঘটনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং মনগড়া। চিঠিতে যেভাবে বিকৃত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তাতে রাজ্য সরকার স্তম্ভিত।