কলকাতা : কৃষ্ণনগরে ২৪ ঘণ্টা, শক্তিনগরে ১৬ ঘণ্টা, সোনারপুরে ১৭ ঘণ্টা, গড়ফায় ১০ ঘণ্টা, তিলজলায় ১০ ঘণ্টা, নিমতায় প্রায় ১৯ ঘণ্টা!
এগুলো হচ্ছে করোনা আক্রান্তদের মৃত্যুর পর দেহ বাড়ি পড়ে থাকার সময়! মৃত্যুর আগে অসহায় পরিস্থিতি! মৃত্যুর পরও ভোগান্তি! ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে থাকছে মৃতদেহ। সরানোর লোক পাওয়া যাচ্ছে না! অসহায়তার চূড়ান্ত নিদর্শন!
উত্তর দমদম পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে, নিমতার আমবাগান এলাকায় করোনা আক্রান্ত প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয় বৃহস্পতিবার রাতে। পরিবার সূত্রের দাবি, ২১ তারিখ করোনা আক্রান্ত হন প্রৌঢ়। হোম আইসোলেশনে চলে যান তিনি। বৃহস্পতিবার রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে প্রৌঢ়ের। পরিবারের দাবি, তীব্র শ্বাসকষ্টের মধ্যেই একের পর এক হাসপাতালে ঘুরতে থাকেন তাঁরা।কিন্তু প্রৌঢ়কে কোথাও ভর্তি করা যায়নি। পথেই মৃত্যু হয় তাঁর।এরপর মৃতদেহ ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় বাড়িতে।
ভোর...সকাল....বেলা....দুপুর....বিকেল....সন্ধে - করোনায় মৃতের দেহ পড়ে থাকে! অবশেষে ১৯ ঘণ্টা পর উত্তর দমদম পুরসভার কর্মীরা প্রৌঢ়ের বাড়িতে গিয়ে মৃতদেহ সরানোর উদ্যোগ নেন।
কোভিডে মৃতের দেহ সরাতে কেন এত দেরি? উত্তর দমদম পুরসভা সূত্রে জানানো হয়, শুক্রবার বেলা ৩টে নাগাদ মৃত্যুসংবাদ পৌঁছয় তাদের কাছে। তারপরই যা পদক্ষেপ করার করা হয়েছে।
শুধু এই ঘটনাটিই নয়, আজ একের পর এক ঘটনায় রীতিমতো শিড়দাঁড়ায় শীতল স্রোত বয়ে গেছে। অন্যদিকে ক্রমেই ভয়ঙ্কর হচ্ছে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ। রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত এবার ১৩ হাজারের পথে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১২,৮৭৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় এ রাজ্যে করোনা মৃত্যু ৫৯। কলকাতায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত ২৮৩০ । উত্তর ২৪ পরগনায় সংখ্যাটা ২৫৮৫। হাওড়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার কবলে ৭৪৬।
এই পরিস্থিতিতে ক্রমেই হাসপাতালে বাড়ছে বেডের হাহাকার। দোকানে দোকানে অমিল অক্সিজেন। কোভিড সঙ্কটের মধ্যেই কলকাতায় অক্সিজেনের আকাল! কলেজ স্ট্রিট চত্বরে দোকানগুলিতে মিলছে না অক্সিজেন। হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ক্রেতারা। ডিলাররা সাপ্লাই দিতে পারছেন না। আক্ষেপ ব্যবসায়ীদের। অক্সিজেন কনসেনট্রেটরও অমিল বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।