ঝিলম করঞ্জাই ও সমীরণ পাল, কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা: বিজেপি নেতা ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টারের ওপর হামলার ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।  মিনাখাঁর একটি ইটভাঁটা থেকে ২ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। 


ইতিমধ্যে পুলিশ ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা রুজু করেছে। বিজেপি নেতার গাড়িটিরও ফরেন্সিক পরীক্ষা হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।  তবে বাবু মাস্টারের তরফে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।  জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বাবু মাস্টারের গাড়ির চালককে, যিনি এখনও আইসিইউ-তে ভর্তি। 


চালকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ঠিক কী ঘটেছিল? সূত্রের খবর, চালক জানান, গাড়ি যখন বামনপুকুর খ্রীষ্টানপাড়া মোড়ে এসে পৌঁছয়, রাস্তার পাশে একটি ইটভাঁটা আছে। চালক ভাবেন, ইটভাঁটা থেকে পায়ে হেটে শ্রমিকরা পার হতে চাইছে দেখে চালক গাড়ি আস্তে করে। তখনই দুষ্কৃতীরা পথচারির বেশে, রাস্তা পার হওয়ার সময় হামলা চালায়। প্রাণে বাঁচতে কোনওরকমে গাড়ি নিয়ে এলাকা ছাড়েন চালক। ২ কিলোমিটার দূরে পৌঁছন হাড়োয়া থানার পুলিশ ফাঁড়িতে।


পেশায় বসিরহাটের ভবানীপুর সেন্ট্রাল মডেল হাইস্কুলের শিক্ষক ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টার আগে সিপিএম করতেন। ২০১১-র বিধানসভা ভোটে পালাবদলের পর সিপিএম ছেড়ে নাম লেখান তৃণমূলে।


২০১৮ সালে হাসনাবাদ থেকে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন তিনি।  কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই দলের থেকে দূরত্ব বাড়ছিল বাবু মাস্টারের। 


মাছ চুরি-সহ একাধিক মামলাও দায়ের হয় বাবু মাস্টারের বিরুদ্ধে। এরপর গত ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেই বিজেপিতে যোগ দেন বাবু মাস্টার।


বাবু মাস্টারের উপর হামলার প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে গতকাল উত্তর চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। 


এরইমধ্যে অ্যাপোলো হাসপাতাল সূত্রে খবর,  হামলায় আহত বিজেপি নেতার শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।  শনিবারই তাঁকে ভর্তি করা হয় অ্যাপোলো হাসপাতালে।  


হাসপাতাল সূত্রে খবর, আহত বিজেপি নেতাকে ডায়াবেটিক ডায়েট দেওয়া হচ্ছে।  চলছে অ্যান্টিবায়োটিক।  তাঁর বাঁ কান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  ছিঁড়ে গেছে কানের লতি।  চিকিত্‍সকরা মনে করছেন, তাঁর শরীরে আরও বেশ কিছু স্প্লিন্টার রয়ে গেছে।  অ্যাপোলো সূত্রে খবর, স্প্লিন্টার বের করার জন্য আগামীকাল অস্ত্রোপচার করা হতে পারে।